ক্রাইমবার্তা রিপোর্টঃ যুকরাষ্ট্রে প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের জয়ের পরে ওয়াশিংটনের সবচেয়ে ‘ক্ষমতাশালী’ নারীর দায়িত্বে ফিরতে পারেন তিনি। ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যালঘু নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি। যিনি এ বারও হাউসের স্পিকার হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন।
২০০৭ সাল থেকে টানা চার বছর পেলোসি এই পদে ছিলেন। স্পিকারের পদে প্রথম মার্কিন নারী হিসেবে বসে ইতিহাস গড়েছিলেন তিনি। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের শাসনের শেষ দু’বছরে পেলোসি শক্তিশালী বিরোধী শক্তি হিসেবে কাজ করেছিলেন। তার প্রথম দফার সেই অভিজ্ঞতা ট্রাম্পের ক্ষেত্রে কাজে লাগবে বলে ধারণা বিশেজ্ঞদের
ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নয়া কর ব্যবস্থা থেকে শুরু করে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার মতো নানা প্রকল্পে এ বার বাধা দেয়ার সুযোগ আসবে পেলোসিদের হাতে। আর বিশেষ করে ট্রাম্পের জন্য তিনি যদি ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করতে চান, তা হলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে আগামী দিনগুলো আরো কঠিন হবে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও ন্যান্সি এত দিন বলে এসেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অত শক্তিশালী রাজনৈতিক অস্ত্র ব্যবহার করার পক্ষপাতী নন তিনি। কারণ এই ধরনের বিস্ফোরক পদক্ষেপে আখেরে লাভবান হবেন ট্রাম্পই। রিপাবলিকান ভোটাররা তখন আরো একজোট হয়ে তাদের প্রেসিডেন্টকে রক্ষা করার চেষ্টা করবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ফের দায়িত্বে এলে পেলোসিকে তাই রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার কাজটি করতে হবে সুনিপুণভাবে। প্রয়োজনে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়াতে হবে। আবার এটাও বোঝাতে হবে, যে তার দল কোনো আইন পাশ করানোর ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একসঙ্গে বসে কাজ করার ক্ষমতা রাখে। পেলোসি নিজেও দলের জয়ের কথা জানার পরে আজ বলেছেন, ‘‘ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস এমন সমাধান খুঁজতে কাজ করবে যা আমাদের একজোট হতে সাহায্য করে। বিভাজনের রাজনীতি অনেক হয়েছে। মার্কিন জনতা শান্তি চায়। কাজ দেখতে চায়।’’
নিজের প্রজন্মের অন্যতম ক্ষুরধার রাজনীতিক বলে মনে করা হয় ন্যান্সিকে। বস্তুত বারাক ওবামার জমানায় ২০১০ সালে বিতর্কিত স্বাস্থ্য বিল ঐতিহাসিক ভাবে পাশ হয়েছিল ন্যান্সির সুপরামর্শেই। তা সত্ত্বেও আট বছর পরে অনেকের কাছে তাঁর ভাবমূর্তি ইতিবাচক নয়।
তার কারণ ভোটারদের মধ্যে পেলোসি খুব একটা জনপ্রিয় নন। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দাবি, ভোটারদের এক তৃতীয়াংশ মনে করেন, হাউসে নয়া নেতা নির্বাচন করা উচিত ডেমোক্র্যাটদের। এই দলের অনেকেও শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন চেয়ে অন্দরে প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন গত কয়েক মাস ধরে। ওহায়োর কংগ্রেস সদস্য টিম রায়ান তাদের অন্যতম। তিনি ২০১৬-র পরে শীর্ষ নেতৃত্বের জন্য চ্যালেঞ্জ করেছিলেন পেলোসিকে। রায়ানের দাবি, ‘‘অনেক ডেমোক্র্যাটই এই পরিবর্তন চান।’’ এই সব জটিলতা ৭৮ বছর বয়সি ন্যান্সি-ও বোঝেন। তাই স্পিকারের পদ নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি তিনি।
মজার কথা, ট্রাম্পই টুইটে তাকে নিয়ে বলেছেন, ‘‘হাউসের স্পিকার হওয়া উচিত ন্যান্সি পেলোসির। ডেমোক্র্যাটরা যদি সেটা না চান, আমরা কিছু রিপাবলিকান ভোট যোগ করে দেব। উনি এতটাই সম্মান পাওয়ার যোগ্য!’’