কারাগার ও প্রবাসে থেকেই নির্বাচনে লড়তে চান বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। স্থানীয় পর্যায়ে এসব নেতার প্রভাব ও জনপ্রিয়তার কারণে দলে তাদের বিকল্প এখনো তৈরি হয়নি বলেই নেতাকর্মীদের ভাষ্য। আইনি জটিলতায় শেষ পর্যন্ত এসব নেতা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে তাদের পরিবারের সদস্যরা নির্বাচনের মাঠে থাকবেন বলে জানা গেছে।
কারাগারে থাকা বিএনপির নেতা আবদুস সালাম পিন্টুর পক্ষে বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রবাসে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের জন্যও নেয়া হয়েছে ফরম। দুই নেতার এ আসনে তাদের স্বজনের নামেও মনোনয়ন ফরম তোলা হয়েছে। যদি কোনো কারণে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়, তাহলে পরিবার থেকে কেউ না কেউ নির্বাচন করবেন।
কায়কোবাদ একাধিকবার নির্বাচন করেছেন কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসন থেকে। তিনি কয়েক বছর ধরে বিদেশে আছেন। এ আসনে তার পাশাপাশি মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন তিন ভাই কাজী মুজিবুল হক, কাজী জুন্নুন বসরী ও কাজী শাহ আরেফিন।
আবদুস সালাম পিন্টুর নামে ফরম তোলা হয়েছে টাঙ্গাইল-২ (ভুয়াপুর-গোপালপুর) আসনের জন্য। একই আসন থেকে ফরম তুলেছেন তার দুই ভাই সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও শামসুল আলম তোফা। টুকু ও তোফা টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের জন্যও ফরম নিয়েছেন।
কারাগারে থাকা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামানের জন্য ফরম নেয়া হয়েছে নেত্রকোনা-৪ (মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুড়ি) আসনের জন্য। ২০০১ সালে বাবর এ আসন থেকেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বাবরের ছেলে লাবিব ইবনে জামান এই ফরম নেন। সাথে ছিলেন বাবর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে তার এপিএস মির্জা হায়দার আলী এবং তিন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা।
গত ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে থাকা বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের জন্য ফরম নেয়া হয়েছে পাবনা-৫ আসনের জন্য। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুস সামাদ খান মন্টু ও সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান তোতা এ ফরম পূরণ করে জমাও দিয়েছেন।
কারাগারে থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর নামেও ফরম তোলা হয়েছে চট্টগ্রাম-৪ আসন থেকে। তার ভাই ইসহাক কাদের চৌধুরীও এ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের জন্য ঢাকা-৮ আসনের ফরম নেয়া হয়েছে।
ফরম নেয়া হয়েছে বিদেশে অবস্থানকারী নেতাদের জন্যও। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার জন্য ঢাকা-৬ থেকে মনোনয়ন কিনেছেন তার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুকের জন্য কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের ফরম নিয়েছেন করিমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি দুলাল শিকদার।
মালয়েশিয়ায় অবস্থানকারী ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি এম এ কাইয়ূমের জন্য ঢাকা-১১ আসন থেকে ফরম নিয়েছেন বিএনপির নেতা শামসুল হক। স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের নামে ফরম তোলা হচ্ছে কক্সবাজার-১ আসনের জন্য।
দীর্ঘ দিন পর দেশে ফিরে চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনের জন্য ফরম কিনেছেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন। তার স্ত্রী ও মহিলা দলের সাবেক সহ-সভানেত্রী নাজমুন্নাহার বেবীও নিয়েছেন একই আসনের ফরম।