নানা জল্পনা-কল্পনার পর আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। এখন অপেক্ষা- অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের।
যা পুরোপুরি নির্ভর করছে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈষম্যহীন আচরণের ওপর- এমনটি মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। তাদের মতে, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেগুলো এখনই কার্যকর করে দৃশ্যমান হওয়া খুবই জরুরি। এতেই নিশ্চিত হবে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ)’।
আর এ ধরনের একটি অনুকূল পরিবেশে ভোটের আয়োজন করে নতুন ইতিহাস গড়ার ব্যাপারে ইতিমধ্যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সিইসি। কিন্তু এসব প্রতিশ্রুতি মাঠপর্যায়ে কতটুকু বাস্তবায়ন হবে- তা নিয়ে এখনও আছে যথেষ্ট সংশয়।
আর যদি কোনো কারণে প্রধানমন্ত্রী ও সিইসির দেয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হয়, তাহলে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটের মাঠে ধরে রাখা কঠিন হবে বলে শঙ্কা বিশ্লেষকদের। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে আভাস দিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার ইসির সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, বিরোধী দলের নির্বাচনে টিকে থাকাটা ইসি ও সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সবার অংশগ্রহণে এমন একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে- যেখানে সংসদ রেখে এবং বর্তমান মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা (এমপি) স্বপদে থেকে নির্বাচন করবেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মাঠপর্যায়ে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেন এমপিরা। তারা গত দশ বছরে তৃণমূলে সংশ্লিষ্ট সবার ওপর এক ধরনের প্রভাব বলয় সৃষ্টি করেছেন। আর এ বলয় ভেঙে প্রভাবমুক্ত হয়ে ইসির সংশ্লিষ্টরা কতটুকু নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবেন, তা নিয়ে আছে শঙ্কা। যদিও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী আচরণবিধি সম্পূর্ণরূপে মেনে চলতে মন্ত্রী-এমপিদের কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।
যে কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রথম ধাপ হচ্ছে-‘সবার অংশগ্রহণ’ নিশ্চিত করা। যা ইতিমধ্যে নিশ্চিত হয়েছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সরকারবিরোধীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু তাদেরকে ভোটের মাঠে ধরে রাখতে বাকি ধাপগুলোও বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। ধাপগুলো হচ্ছে- ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ)’, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের নিরপেক্ষ আচরণ, ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট দেয়ার সুযোগ এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভোট গ্রহণ ও গণনার মাধ্যমে নির্বাচিত প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা এবং ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন কিনা, সে বিষয় এখনও নিশ্চিত করা হয়নি বলে অভিযোগ সরকারবিরোধীদের।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে বুধবার বেশ কয়েকটি বিষয় ইসির নজরে এনেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এগুলো হচ্ছে- ভোটের তারিখ তিন সপ্তাহ পেছানো, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) একেবারেই ব্যবহার না করা, প্রতি কেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েন, গায়েবি মামলা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দি নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া, জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে রদবদল। প্রত্যেকটি বিষয়ে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে ইসি। তবে ইসির কাছে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে এসব দাবি তুলে ধরার পর বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছি, তারা বলেছে দেখবেন। আলোচনা করে জানাবেন। তারা তো সব সময়ই এ কথা বলেন। কতটুকু দেখবেন এখন সেটাই দেখার বিষয়।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে আসার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার নিজ দলের এক সভায় তিনি বলেছেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে তিনি সবকিছুই করবেন। জনগণ যাকে চায় তাকে ভোট দেবে। এর আগে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দু’দফা সংলাপে ফ্রন্টের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আমার প্রতি আস্থা রাখুন। জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয়, আমরা থাকব। আপনাদের ভোট দিলে আপনারা জিতবেন। নির্বাচনে কোনো প্রকার কারচুপি-জালিয়াতি, কোনো কিছু হবে না। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার (অবাধ ও সুষ্ঠু), ক্রেডিবল (বিশ্বাসযোগ্য) এবং অ্যাকসেপ্টেবল (গ্রহণযোগ্য) ইলেকশন হবে।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হবে এবং এ ব্যাপারে তার (প্রধানমন্ত্রী) কোনো আন্তরিকতার অভাব নেই বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্ট, ১৪ দলীয় জোটসহ ৭০টি দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সংলাপ করে সবার বাহবা কুড়িয়েছেন। কারণ এ সংলাপের মধ্য দিয়ে দশম সংসদ নির্বাচনের পর থেকে সৃষ্ট প্রায় পাঁচ বছরের দমবন্ধ পরিবেশে অন্তত নিঃশ্বাস ফেলার জায়গা তৈরি হয়েছে। যদিও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাদের মূল দাবির একটিও মানা হয়নি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সরকারবিরোধীদের নির্বাচনে আসার ঘোষণায় সংলাপ পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর নির্বাচনের আগে পর্যায়ক্রমে তাদের দাবিগুলো পূর্ণাঙ্গ বা আংশিকভাবে বাস্তবায়ন হতে পারে বলেও ধারণা সংশ্লিষ্টদের। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মামলা ও গ্রেফতার বন্ধে সরকারের হাইকমান্ড থেকে পুলিশকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
কিন্তু গত রোববার ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সময় ড. কামাল হোসেন অভিযোগ করেছেন, ‘উভয় পক্ষের মধ্যকার দু’দফা সংলাপে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আশ্বাস দিয়েছিলেন বিরোধীদের সভা-সমাবেশ করার ওপর কোনো রকম বিধিনিষেধ থাকবে না এবং গায়েবি মামলাসহ নানা রকম রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলায় যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদেরকে মুক্তি দেয়া হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের হয়রানিমূলক মামলা আর দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর প্রথম আশ্বাসের পরেই ঢাকায় ও রাজশাহীতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুটি জনসভা হয়েছে। দুটি জনসভারই লিখিত অনুমতি দিতে দেরি করে এবং সরকারি মদদপুষ্ট পরিবহন সংকট তৈরি করে মানুষের জনসভায় অংশগ্রহণের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। রাজশাহীতে জনসভা হওয়ার দু’দিন আগে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এমনকি রাজশাহীর সঙ্গে আশপাশের অনেক জেলার বাস যোগাযোগ বন্ধ ছিল।’ তিনি বলেন, ‘দুই দিনের জনসভাকে কেন্দ্র করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শত শত নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হয়রানিমূলক গ্রেফতার বন্ধের আশ্বাস দেয়ার পর একদিনে ১২শ’রও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন যুগান্তরকে বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবার আগে প্রয়োজন ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’। এ ক্ষেত্রে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) বৈষম্যহীন আচরণের প্রতি নিবেদিত হতে হবে। নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যেসব ওয়াদা করেছেন, সেগুলো রক্ষা করা খুবই জরুরি। পাশাপাশি ইসিকে সব ধরনের প্রভাবমুক্ত থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী আইন মোতাবেক নিজস্ব ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। বিশেষ করে প্রশাসন অথবা পুলিশের যেসব সদস্য আগের থেকেই দলীয়ভাবে চিহ্নিত তাদেরকে দ্রুত বদলে ফেলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের গ্রেফতার করা থেকে বিরত থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশ্ন উঠতে পারে যদি তারা অপরাধ করে তাহলে কি পুলিশ বসে থাকবে। আমার উত্তর হল, বসে থাকবে। কারণ যখন গ্রেফতার করা হয় তখন তো রাজনৈতিক কারণ দেখায় না। তখন দেখানো হয় ফৌজদারি অপরাধ বা গরু চুরি ইত্যাদি। তবে কেউ যদি জঘন্য অপরাধ (খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, ঘুষ ইত্যাদি) করে, তাদেরকে গ্রেফতার করবে। এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কারণসহ ইসির অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক হতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দু-তিন জায়গায় দেখেছি, গ্রেফতার না করার বিষয়ে হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা আনতে হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। হাইকোর্টের নির্দেশনার মতো ইসিরও উচিত হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সেই রকম কঠোর নির্দেশনা দেয়া।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যারা মন্ত্রী বা এমপি আছেন, তাদের সরকারি সুবিধাগুলো সীমিত করতে হবে। আমি মনে করি সবকিছু একেবারেই বন্ধ করা যাবে না, কারণ তারা তো মন্ত্রী বা এমপি। তাই সরকারের পক্ষ থেকেই প্রটোকল নেয়ার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করতে হবে। এসব বাস্তবায়ন করলেই সরকার ও ইসির ওপর রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়বে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি নুরুল হুদা বলেছেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে নতুন একটা ইতিহাস তৈরি হবে। কেননা এ নির্বাচন যদি সফল হয়, তাহলে এরপর থেকে হয়তো সরকার ও সংসদ থেকেই নির্বাচন পরিচালিত হবে। স্থিতিশীল অবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।’ ইতিহাস তৈরির বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আসলেই এ বছরের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কখনও রাষ্ট্রপতি শাসিত, কখনও সেনাবাহিনীর অধীনে, কখনও কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু এবারই সরকারের অধীনে নির্বাচন। আপনারা বলতে পারেন, ২০১৪ সালে সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু তখন সব দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি।’
এর আগের দিন বুধবার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বলেছেন, যে যেই অবস্থানে থাকুক না কেন, অত্যন্ত নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রার্থীকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে হবে। সব প্রার্থীকে সমান সুযোগ দিতে হবে। আইনগতভাবে কেউ যেন বঞ্চিত না হন, আবার কেউ যেন বাড়তি সুবিধা না পান সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বিরোধীদের নির্বাচনে আসার ঘোষণায় মানুষের মধ্যে প্রাথমিক স্বস্তি এসেছে। কিন্তু সরকার নিয়ন্ত্রণমূলক নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা থেকে সরে এসেছে, তার পুরোপুরি নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। প্রচার-প্রচারণার দিক থেকে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নেই। এ ক্ষেত্রে গায়েবি মামলা দিয়ে বিরোধীদের হয়রানির একটি চিত্র আমরা লক্ষ করছি। এসব মামলায় নিরীহ মানুষকেও হয়রানি করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সংবিধানের দোহাই দেয়ার অবকাশ নেই। কারণ সংবিধান গায়েবি মামলার অনুমতি দেয়নি।
তার মতে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অপরিসীম। বিশ্বাসযোগ্যতার জায়গাগুলো তারা নিশ্চিত করতে পারবে কিনা, সেটি দেখার বিষয়। এর আগে তাদের ব্যর্থতার অন্যতম উদাহরণ হল, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীদের অভিযোগগুলোর এখনও সুরাহা হয়নি। এতে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এরপর প্রশাসনের নিরপেক্ষতা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশনের লোকজনের থাকা উচিত ছিল। কিন্তু সেখানে প্রশাসন থেকে বানানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রভাবিত করার একটি সুযোগ থাকে। ড. হোসেন জিল্লুর বলেন, ভোটাররা ভোট দিতে যেতে পারবেন কিনা সেটি বড় প্রশ্ন। কারণ কিছু কিছু প্রার্থীর আচরণে দেখা গেছে ভোটের দরকার নেই, দলের মনোনয়ন পেলেই মনে করেন, তারা এমপি হয়ে গেছেন। এটি একটি ভয়ের কারণ।
ইসির যত পদক্ষেপ : মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো সরকারি সুবিধা পাবেন না বলে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া নিরাপত্তা নিশ্চিতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে নির্বাচনের ২ থেকে ১০ দিন আগে সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এ ছাড়া ইসির অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি না করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠিকে দিয়েছে ইসি। দলীয় কার্যালয় বা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা নিয়ে যে কোনো মিছিল-শোডাউন বন্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচন পর্যন্ত সব ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া এবং অনুদান বন্ধে সরকারকে চিঠি দিয়েছে ইসি।