ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট:
নজরদারির মধ্যে রয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের নেতারা। তারা কোথায় যাচ্ছেন, কার সাথে যোগাযোগ করছেন ও কথা বলছেন সবই মনিটরিং করা হচ্ছে। স্ব স্ব এলাকার পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও এর পেছনে বিপুলসংখ্যক গোয়েন্দা সদস্য ও সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন পর্যন্ত তাদের মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখা হবে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে এখন পুরোদমে নির্বাচনী কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে বিএনপি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু করেছে। গতকাল দিনভর সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। নির্বাচনী আমেজ নিয়েই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছেন। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে। নতুন যে গায়েবি মামলা হয়েছে সেসব মামলায়ও অনেকে আসামি হয়েছেন। এসব মামলার তদন্ত চলছে। নির্বাচনের আগেই অনেক মামলায় চার্জশিট দেয়ারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্টন থানার এক কর্মকর্তা গতকাল জানান, তার হাতে যে মামলা রয়েছে তা তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। নির্বাচনের আগেই এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, কাদেরকে মামলায় রাখা হবে আর কাদের নাম বাদ দেয়া হবে তা ওপরের নির্দেশেই হচ্ছে।
গত ১৪ নভেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ কয়েক শ’ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয় পল্টন থানায়। সূত্র জানায়, এই মামলার সূত্র ধরে পুলিশ এখন অনেক নেতাকর্মীকে খুঁজছে। গতকাল এ মামলায় মীর্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী জামিন নেয়ার পরেও পুলিশ শাহজাহানপুরে আব্বাসের বাস ভবনে যায়। বেলা ৩টার দিকে পুলিশ পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে।
পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, বিরোধী নেতারা নজরদারির মধ্যেই থাকছেন, যাতে তাদের হাতের নাগালে পাওয়া যায়। এর মধ্যে শীর্ষ সারির নেতা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাও রয়েছেন। কয়েক ভাগে শ্রেণী-বিন্যাস করে নেতাকর্মীদের প্রতি নজরদারি করা হচ্ছে। কার বিরুদ্ধে কয়টা মামলা আছে, কার জনসমর্থন কেমন, কারা নমিনেশন পেপার কিনতে পারেন, কারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, কোন নেতার টাকা-কড়ি কেমন আছে ইত্যাদি সবই নজরদারির আওতায় বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, অনেকের পেছনে স্থায়ীভাবে লোক লাগানো রয়েছে।
এ দিকে গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। এখনো জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগছেন। গতকালও ঢাকার আদালত পাড়ায় গিয়ে দেখা যায় গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের ভিড়। শনিবার রাতে তাদের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল মির্জা আব্বাসের পরিবার অভিযোগ করে, ওই বাসা থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে।
কামরাঙ্গীরচরের এক নেতা গতকাল বলেন, প্রায় প্রতি রাতেই তিনিসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চলছে। পুলিশ বলছে এটি তাদের রুটিন ওয়ার্ক।