ক্রাইমবার্তা রিপোট: সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী আ ন ম এহসানুল হক মিলনকে গ্রেপ্তার করেছে চাঁদপুর গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার ভোরে চট্টগ্রামের চকবাজারের চট্টেশ্বরী এলাকার এক বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ও জেলা ডিবির ওসি মামুনের নেতৃত্বে চকবাজার থানার ৪৫২ চট্টেশ্বরী রোডের ‘মমতাজ ছায়ানীড়’ নামের বাসা থেকে মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়। চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মিলনের স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবী লাইভ ভিডিওতে মিলনের সঙ্গে কথা বলেছেন। সে ভিডিওতে তিনি ডিবি পুলিশ সদস্যদেরকে জিজ্ঞাসা করছেন ‘আপনারা তাকে (মিলনকে) কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন, পুলিশ তখন বলছেন আপনি চিন্তামুক্ত থাকেন। আমরা তাকে কোর্টে নিয়ে যাবো।
ভিডিওর বিষয়টি নিশ্চিত করে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের নেত্রী ও তাঁর স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবী শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯ টায় মানবজমিনকে জানান, গ্রেপ্তারের সময় আমি দেখেছি চাঁদপুরের ডিবি পুলিশের মামুন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছলেন। তখন রাত সাড়ে ৪টা। তাকে চট্টগ্রামের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়, সম্ভবত এখন মিলন চাঁদপুর এসপি কার্যালয়ে আছেন।’
মিলনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) জিহাদুল কবির বলেন, এহসানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সূত্রমতে জানা যায়, আ ন ম হছানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে চাঁদপুরে আদালতে ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনতাই মামলাসহ ২৮টি মামলা বিচারাধীন।
গত মঙ্গলবার চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সরওয়ার আলমের আদালতে একটি জিআর মামলায় হাজির হওয়ার কথা থাকলেও, হাজির হননি তিনি।
মিলনকে গ্রেপ্তারের জন্য গত ছয়দিন ধরে চাঁদপুরের আদালত চত্বরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গতকাল সকাল থেকেও চাঁদপুর সদর পুলিশ সুপার (সার্কেল) জাহেদ পারভেজের নেতৃত্বে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের কয়েকটি দল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা জজ আদালতের প্রত্যেকটি প্রবেশ মুখ ঘিরে রাখে।
মিলনের আইনজীবী কামরুল ইসলাম বলেন, এভাবে আদালতের চতুর দিকে পুলিশ প্রহরা থাকলে মিলন কেন, কোনো আসামিই আদালতে ভয়ে ঢুকতে পারবেন না।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বিদেশে যাওয়ার আগে সব মামলায় জামিনে ছিলেন মিলন। কিন্তু দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার কারণে এসব মামলায় হাজিরা দিতে পারেননি। এ জন্য ২৬টি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এদিকে আদালতে হাজিরার সময় নিরাপত্তা চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে আবেদন করেছেন আ ন ম এহসানুল হক মিলন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর একটি চিঠিতে তিনি এ আবেদন জানান। গত রোববার বিকেলে আত্মগোপনে থাকা মিলনের স্বাক্ষরিত চিঠিটি ইসিতে নিয়ে যান তার স্ত্রী নাজমুন্নাহার বেবি।
প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে বিএনপির মনোনয়নপত্র কিনেছেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আ ন ম এহসানুল হক মিলন।