বুড়িগঙ্গায় মনোনয়নপ্রত্যাশীর লাশ বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিষয় : কাদের

ক্রাইমবার্তা রিপোট: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যশোর বিএনপি নেতা কীভাবে খুন হলেন, লাশ কীভাবে বুড়িগঙ্গা নদীতে গেল, তা তদন্ত করে বের করতে হবে। সেখানে তাদেরও তো অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন। কে কার শত্রু, তা তো আমরা জানি না। এটি বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিষয় হতে পারে।

শুক্রবার সকালে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

দলের কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী বাদ পড়ছেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারা বাদ পড়ছেন বা থাকছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার পর জানা যাবে।

অলি আহমেদ বলছেন, এখনও নির্বাচন হয় কিনা তা নিয়ে সন্দিহান-এটি কিসের ইঙ্গিত, প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে কে কোন কথা বললেন, তা দিয়ে নির্বাচনের ভবিষ্যৎ ব্যক্ত করা যায় না। অনেকে সংশয় প্রকাশ করছেন। আমরা চাই সবার সহযোগিতায় সংশয়ের এ মেঘ কেটে যাক।

‘কামাল হোসেন নিঃশর্তভাবে তারেক রহমানের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন। তিনি ঐক্যফ্রন্টের মাঠের ফেইস হিসেবে কাজ করছেন, যেখানে তিনি নাম সর্বস্ব আছেন।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যেখানে তিনি তারেক রহমানের কলঙ্কিত নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন, সেখানে আমার কিছু বলার নেই।

তিনি বলেন, এখন নয়াপল্টনের অফিস ও অফিসের সামনে মনোনয়নের জন্য যে জোয়ার, এটি ধানের শীষের জোয়ার হতে পারে, সারা দেশে এ জোয়ার নেই। সারা দেশে নৌকার জোয়ার। অফিসে, অফিসের সামনে যে জোয়ার, এটি দিয়ে যদি বিএনপির নেতারা রঙিন খোয়াব দেখেন, তা হলে ৩০ ডিসেম্বর টের পাবেন-সত্যটা কী।

ইভিএম প্রসঙ্গে বলেন, সিলেটের দুটি ইভিএমেই আমরা হেরে গেছি। তবে কেউ আদালতে গেলে সেটি মোকাবেলা হবে। আদালতে তো ব্যবস্থা আছেই।

বিএনপি নেতা এহসানুল হক মিলনের গ্রেফতার, যশোর জেলা বিএনপির লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে এসব ঘটনা মিলে বিএনপি বলছে-তাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই আবার গুম-খুনের রাজনীতি শুরু হয়েছে।

সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যশোরের কোনো প্রার্থীর বুড়িগঙ্গা নদীতে লাশ। এখানে তো ডাল মে কুচ কালা হায়। তার সঙ্গে তার দলের কোনো প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতে পারে, তাকে সরিয়ে দিলে তিনি হয়তো নমিনেশন পাবেন। এ আশা থাকতে পারে।

‘এখানে আওয়ামী লীগের কোনো স্বার্থ নেই। এটি বিএনপির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হতে পারে। তদন্ত করলে সব বেরিয়ে আসবে।’

তিনি বলেন, যশোরের শহর এলাকায় আমাদের দুই-তিনজন জনপ্রিয় প্রার্থী আছেন। এর মধ্যে একজনকে আমাদের বাছাই করতে হবে। এখানে বিএনপির সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই।

বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখাইতে গ্রেফতার অভিযান, এমন অভিযোগের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, অশ্রাব্য গালাগাল শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গেছে। তার পর পল্টনে সহিংসতা। আমরা নির্বাচন চাই বলে অনেক কিছু হজম করে যাচ্ছি। নিবাচন চাই বলে, বাংলাদেশের ইতিহাসের বিরল ঘটনা, দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং সংলাপ করেছেন।

‘স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বিএনপিসহ ৭৫ দলের সঙ্গে সংলাপ করেছেন।’

তিনি বলেন, বিরোধী দল অভিযোগ করছে; তারা অভিযোগ করবেই। অভিযোগ তো বিরোধী দলই করবে বেশি। অভিযোগ আসুক, ইসি যদি মনে করে তাদের অভিযোগে সত্যতা রয়েছে, তা হলে ইসি সমাধান করবে। ইসি তো আমাদের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধান করবে না।

‘যেমন তারেক জিয়ার সাক্ষাৎকার নেয়ার ব্যাপারে আমাদের অভিযোগ ছিল, কিন্তু ইসি বলছে-এটি তাদের আরপিও কাভার করে না।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কয়েক দিন আগেও বলেছেন-ইসি যদি তাদের সব দাবি না মানে, ইসি যদি সব অভিযোগ না নেয়, তা হলে যে কোনো সময় বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারে। তা হলে আপনাদের অন্য কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা? এ প্রশ্নে সেতুমন্ত্রী বলেন, তখন আমরা কী করব, হাতে পায়ে ধরব। আমার ধারণা বিএনপি নির্বাচন থেকে সরবে না।

যদি সরে যায়, তখন কী পরিকল্পনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি নদীতে ফেলে দেন।

তিনি বলেন, মিথ্যাচারের প্রডাকশন অফিস হচ্ছে পল্টন। ওখান থেকে কত কথাই না বের হবে। এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে থাকলে তো শুধু তাদের জবাব দিতেই ব্যস্ত থাকব। আমরা এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। তারা দিয়ে যাচ্ছে, দিয়ে যাক; আপনারা দেখতে পারবেন নির্বাচন কতটা স্বচ্ছ ও ভালো হচ্ছে।

‘তা ছাড়া বিদেশি পর্যবেক্ষক আসতে কোনো বাধা নেই। পর্যবেক্ষক আসবে, তারা দেখবে, মনিটর করবে, ক্লোজড মনিটরিং, আর মিডিয়া তো যাচ্ছেই। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সব বুথেই তো দেখলাম মিডিয়ার প্রবেশ ঘটেছে।’

‘কাজেই মিডিয়ার যেখানে এত বিস্ফোরণ, সেখানে সত্যকে কেউ চাপা দিয়ে রাখতে পারবে না,’ বললেন সেতুমন্ত্রী।

তিনি বলেন, স্টেটের কোনো ম্যাকানিজম কাজ করবে না, যদি জনমত আমাদের বিরুদ্ধে থাকে। জনমত পক্ষে থাকলে এখানে প্রশাসন কোনো বিষয় না। জনমত পক্ষে না থাকলে কোনো ম্যাকানিজম দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা যায় না। জনগণের ম্যাজিস্ট্রিই হচ্ছে সবার ওপরে।

নির্বাচন সামনে রেখে দেশে কোনো নাশকতার আশংকা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আছে। বিএনপি তো নাশকতা পল্টন থেকে শুরুই করেছে।

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।