ক্রাইমবার্তা রিপোর্টঃ দুবাই টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে সমতায় ফিরলো পাকিস্তান। মঙ্গলবার টেস্টের চতুর্থ দিনে নিউজিল্যান্ড নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয়েছে ৩১২ রানে। ফলে পাকিস্তান জয় পেয়েছে এক ইনিংস ও ১৬ রানে। ৭ বছর পর কোন প্রতিপক্ষকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান।
নিউজিল্যান্ড মূলত দিশে হারিয়েছে পাকিস্তানি লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ’র কবজির মোচড়ে। প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেট নেয়া ইয়াসির দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৬ উইকেট। ১৪ উইকেট নিতে ইয়াসির রান খরচ করেছেন ১৮৪ রান। পাকিস্তানি বোলারদের মধ্যে এটি টেস্টে দ্বিতীয় সেরা বোলিং রেকর্ড। এর আগে কিংবদন্তী ইমরান খান এক টেস্টে ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন ১১৬ রান খরচ করে।
ফলো অন করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে কিউই ব্যাটসম্যানরা ভালোই লড়াই করেছেন। মিডল অর্ডারে রস টেইলর(৮২) ও নিকলসের(৭৭) ব্যাট দলটিকে ইনিংস পরাজয় এড়ানোর স্বপ্নও দেখিয়েছিলো। চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে টেইলর বিলাল আসিফের বলে ফিরে যাওয়ার পরও নিকলস লড়াই করেছেন একপ্রান্তে। তবে অন্য প্রান্ত দিয়ে একের পর এক উইকেট তুলে নিয়েছেন ইয়াসির শাহ।
অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেকে নিকলস আউট হয়েছেন ৩০১ রানে, এরপর নিউজিল্যান্ড করতে পেরেছে মাত্র ১০ রান। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানে অলআউট হওয়াই মূলত তাদের ইনিংস পরাজয় ত্বরান্বিত করেছে।
দুবাইয়ের পিচে ব্যাটিং করা যে কতটা কঠিন তা নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের সংগ্রাম করা দেখেই বোঝা গেছে। তাই এই টেস্টে পাকিস্তানের জয় যদি ইয়াসির শাহের হাত ধরে আসে, তাহলে বলতে হবে জয়ের ভিত্তিটা তৈরি করে দিয়েছেন দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হারিস সোহেল ও বাবর আজম।
দুজনের ধৈর্যশীল ইনিংসই পাকিস্তানকে এই প্রতিকূল পিচেও বড় স্কোর এনে দিয়েছে। অথচ হারিস ও বাবর কেন এত ধীর গতির ব্যাটিং করেছেন সেটি নিয়ে দর্শক, ধারাভাষ্যকারদের সমালোচনার অন্ত ছিলো না; কিন্তু নিউজিল্যান্ডের ইনিংস দুটি দেখে বোঝা গেছে এই পিচে ক্রিজে টিকে থাকা কতটা কঠিন! সেই কঠিন কাজটিই অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে করেছেন হারিস ও বাবর। তাদের সহযোগিতা করেছন আজহার আলী।
মাত্র ২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর পাকিস্তানকে নিয়ে চ্যালেঞ্জিং স্কোরের পথে হেঁটেছেন হারিস সোহেল ও আজহার। আজহার ১৮৭ বলে ৮১ রান করে আউট হয়েছে। দুজনে গড়েছেন ১২৬ রানের জুটি।
তবে হারিস পেয়েছেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। তার ১৪৭ রান এসেছে ৪১২ বলে, স্ট্রাইক রেট ৩৪! টি-টোয়েন্টির এই জমানায় টেস্টে যেখানে ওভার প্রতি প্রায় চার করে রান ওঠে, সেখানে পাকিস্তান রান তুলেছে ওভারপ্রতি ২ এর কিছু বেশি।
আজহার ফিরে যাওয়ার পর আসাদ শফিকও দ্রুত ফিরে যান। তবে এরপর ক্রিজে আসা বাবর আজমও ছিলেন ধৈর্যের মূর্তপ্রতীক। ২৬৩ বলে ১২৭ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১২৭ রানে। হারিস ও বাবরের জুটিটি ছিলো ১৮৬ রানের। এই দুজনের সেঞ্চুরি ইনিংসে ভর করেই পাকিস্তান জয়ের ভীত পেয়েছে এই ইনিংসে। আর নিউজিল্যান্ডকে দুই বার অলআউট করার কাজটা সেরেছেন ইয়াসির শাহ।
সিরিজের এখন ১-১ সমতা। প্রথম টেস্টে নানা নাটকীয়তার পর নিউজিল্যান্ড জিতেছিলো ৪ রানে। শেষ টেস্ট আবুধাবিতে শুরু হবে আগামী ৩ ডিসেম্বর।