ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: টেস্টে এখনো অভিষেকটা হয়নি সাদমানের, কিন্তু ঢাকা টেস্টের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের ১৩ সদস্যের দলে ইমরুল কায়েস নেই।
তাই সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ঢাকা টেস্টে সৌম্য সরকারের সাথে সাদমানের অভিষেকটা সময়ের ব্যাপার। সাদমান ইসলাম অনিক পরিচিতি লাভ করেন আরো আগে, সময়টা তখন ২০১৪ সাল।
পাকিস্তানের ইমাম-উল-হক, দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যাডাম মারক্রাম, ইংল্যান্ডের বেন ডাকেটদের ছাপিয়ে সেবার অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ৬ ইনিংস ব্যাট করে ৪০৬ রান তোলেন।
গড় ১০১.৫০, একটি শতক, দুটি অর্ধশতক, সর্বোচ্চ ১২৬ অপরাজিত।
সাদমান ইসলাম অনিকের আন্তর্জাতিক অভিষেক আরো আগেই হতো। কিন্তু বাবা শহীদুল ইসলাম কখনোই চাননি তার ছেলে দুই-এক ম্যাচের খেলোয়াড় হোক।
“ও চাচ্ছিলো অনেক আগে থেকে তবে আমি চাচ্ছিলাম পরিপক্ক হয়েই জাতীয় দলে খেলুক, আগেও সুযোগ ছিল, কিন্তু সে সুযোগ পায়নি, তখন সে আপসেট হয়েছিল, কিন্তু আমি ওকে বলেছি যত সময় যাবে ততই ভালো হবে,” বলছিলেন শহীদুল ইসলাম।
ধীরে ধীরে তাকে পরিণত করার দায়িত্বটা তার বাবাই নিয়েছেন।
সাদমান ইসলাম অনিকের বাবা শহীদুল ইসলামের সাথে কথা বলে বিবিসি বাংলা, তিনি বলেন ছেলেকে টেস্ট ক্রিকেটার বানানোর স্বপ্নটা অনেক পুরোনো।
“আমি এটা জানতাম, ছোটবেলা থেকেই এভাবে গড়ে তুলেছি, রানের চেয়ে উইকেটের মূল্য বেশি দিতে হবে। ২০০০, ২০০১ এমন সময়ে আমার ছেলের বয়স ৬-৭ বছর তখন বাংলাদেশ আড়াই তিনদিনে হেরে যেতো।”
“আমার ছেলেকে এমন ক্রিকেটার গড়ে তুলতে চেয়েছি যাতে সে উইকেটের মূল্যায়নটা বোঝে, আমি এখনো বলি বিপিএল বা এমন খেলা নিয়ে তার মাথাব্যথার প্রয়োজন নেই, টেস্ট খেলার পক্ষপাতীই থাকুক,” বলছিলেন সাদমান ইসলামের বাবা।
বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের গেম ডেভেলপমেন্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শহীদুল ইসলাম।
তার অধীনেই উঠে এসেছে সাকিব, মুশফিকের মতো ক্রিকেটাররা।
“ওদেরকে যেই চোখে দেখি সেই একই নজরে আমি আমার ছেলেকে দেখেছি, ওর ব্যাচমেট মিরাজ, শান্তরা, ও যে আমার ছেলে এটা কখনো জানতো না, বুঝতে দেইনি। একই রকম স্নেহ করেছি সবাইকে।”
সাদমানের সাথে কথা বলছিলাম, তিনিও বলছিলেন বাংলাদেশের হয়ে খেলাটা তার স্বপ্ন ছিল কিন্তু তাড়াহুড়ো করেননি কখনো।
সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় ক্রিকেট লিগে সাদমান দুটি সেঞ্চুরিম তিনটি হাফ-সেঞ্চুরি সহ ৬৪৮ রান করে সবার ওপরে আছেন।
মোট রান ৬৪৮, দশ ইনিংসে।
যেহেতু অভিষেকের আগেই তাকে নিয়ে বড় মাপের আলোচনা হচ্ছে তার মনে কি প্রত্যাশার চাপ বাড়ছে?
“আমি তেমন কিছুই ভাবিনি, এমনকি অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপেও না, গেল দুই বছর শুধু লঙ্গার ভার্সন নিয়েই ভেবেছি, টেস্ট ক্রিকেটটাই আমার প্রিয়।”
“হ্যা, এমন হয়েছে যে অনেকেই ভাবে অনূর্ধ্ব ১৯ এ ভালো করলে সে জাতীয় দলে আসবেই আমি এমনটা ভাবিনি,” বলছিলেন সাদমান ইসলাম অনিক। সূত্র: বিবিসি বাংলা।