ক্রাইমবার্তা রিপোট: ভোটের রাজনীতিতে দলের চেয়ে জোট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনগুলোর ফল বিশ্লেষণ করলে এই চিত্রই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ১৯৯১ সাল থেকে হওয়া সব জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলে জোটের প্রভাব বেশি দেখা গেছে। এ কারণে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল জোটকেই প্রাধান্য দিচ্ছে।
পঞ্চম থেকে দশম সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, জোটের রাজনীতিই ভোটের ফলাফল নির্ধারণ করেছে। এই সময়ে জাতীয় পার্টি ও জামায়াত প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে। একই সঙ্গে সংসদেও নিজেদের অবস্থান পোক্ত করেছিল দল দুটি।
রাজনীতি গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, ভোটের রাজনীতিতে এখন জোটের কদর বেশি। তাই রাজনৈতিক দলগুলো ছোট–বড় দলের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করে নির্বাচনে অংশ নেয়। এ ক্ষেত্রে ছোট দলগুলোও প্রভাব ফেলতে পারে, তাই তাদেরও কদর বাড়ে। তিনি বলেন, এমন অনেক আসন আছে, যেখানে অল্প ভোটে জয়–পরাজয় নির্ধারিত হয়। সেখানে জোটগত নির্বাচন হলে জোটভুক্ত দলগুলোর সমর্থকদের ভোটে প্রার্থী বিজয়ী হয়ে যান।
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এরশাদ সরকারের পতনের পর। বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ওই নির্বাচন হয়। নির্বাচনের আগেই এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গড়ে ওঠা জোট বা ঐক্য অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ৮–দলীয় জোটের শরিকেরা জোটবদ্ধ নির্বাচন করার চেষ্টা করলেও আসন ভাগাভাগির প্রশ্নে একমত হতে পারেনি। আওয়ামী লীগ অনেকটা একলা চলো নীতি অবলম্বন করে। এ কারণে আওয়ামী লীগ বাদে ৮–দলীয় জোটের অন্য শরিকেরা এবং ৫–দলীয় বাম জোটের সমন্বয়ে গঠন করা হয় গণতান্ত্রিক ঐক্যজোট। এ সময় আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দিলেও একপর্যায়ে ৫টি দলকে ৩৬টি আসন ছেড়ে দেয়। এ কারণে গণতান্ত্রিক ঐক্যজোটের ভেতরেও দেখা দেয় ভিন্ন প্রতিক্রিয়া। অনেক আসনে এই জোটের প্রার্থীরা ৮–দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে, কোথাও গণতান্ত্রিক ঐক্যজোটের প্রার্থী আবার কোথাও দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন।
নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আওয়ামী লীগ জয়ের ব্যাপারে অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী ছিল। তাই জোটের বিষয়ে অতটা আগ্রহী ছিল না। অন্যদিকে, বিএনপি ছিল বেশ কৌশলী। কোনো রাজনৈতিক জোট গঠন না করলে জামায়াতের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক সমঝোতা করে দলটি। ওই সমঝোতার ভিত্তিতে জামায়াতকে ৬৮ আসন ছাড়তে রাজি হয়। নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায় বিএনপি প্রদত্ত ভোটের ৩০ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং আওয়ামী লীগ ৩০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ পায়। কিন্তু আসনের দিক থেকে বিএনপি পায় ১৪০টি এবং আওয়ামী লীগ ৮৮ আসন। সমঝোতা করে জামায়াত ১২ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট পায়, আসনের হিসাবে ১৮টি। জাতীয় পার্টি ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ ভোট পেয়ে ৩৫টি আসন পায়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করা দলগুলোর মধ্যে সিপিবি ও বাকশাল ৫টি করে ১০টি আসন পায়। দুই দলের মোট ভোট ৩ শতাংশ। অন্যান্য দল ৬ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পান ৩টি আসন। তাদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ১২ শতাংশের বেশি।
পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের পর জামায়াতের নিঃশর্ত সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করে। কিন্তু তাদের রাজনৈতিক এই সখ্যে ফাটল ধরে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ইস্যুতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের সময় থেকে। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনে জোরালোভাবে মাঠে নামে। সঙ্গী করে জামায়াত ও এরশাদের জাতীয় পার্টিকে। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য ছিল বিএনপির বলয় থেকে জামায়াতকে সরিয়ে নেওয়া। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সফল হয়েছিল।
সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (খালেক), জাসদ (ইনু), বাসদ (মাহবুব), শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল, সাম্যবাদী দল ও ঐক্য প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনে শামিল হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন চলাকালে ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন বিরোধীদলীয় ১৪৭ জন সাংসদ পদত্যাগ করেন। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রবল হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে ১৯৯৫ সালের ২৪ নভেম্বর সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার কথা বলে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন। তাতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নেয়নি। আন্দোলনের চাপে ৩০ মার্চ বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে দলগুলো এককভাবেই অংশ নেয়। নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ ১৪৬ আসনে বিজয়ী হয়। বিএনপি পায় ৩৩ দশমিক ৬১ শতাংশ ভোট। আর আসনের হিসাবে তা ১১৬টি। জাতীয় পার্টি ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় ৩২টি। জামায়াতের ভোট কমে যায়। ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ ভোট পেয়ে তাদের আসন হয় ৩টি। নির্বাচনে ইসলামি ঐক্যজোট ১, জাসদ রব ১ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১টি আসন পেয়েছিল। নির্বাচন শেষে জাসদ রব ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ঐকমত্যের সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
সপ্তম জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেব সরকার গঠনের জন্য অন্য দলের সমর্থের প্রয়োজন ছিল শেখ হাসিনার। তিনি ঐকমত্যের সরকার গঠন করে মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব আনোয়ার মঞ্জু ও জাসদের আ স ম আবদুর রবকে অন্তর্ভুক্ত করেন। বিএনপিকেও আহ্বান জানালে বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করে।
এই সময়ে এরশাদের গুরুত্ব বেড়ে যায়। তাঁকে নিয়ে টানাটানি শুরু হয় প্রধান দুই দলের মধ্যে। বিএনপির পুরো শাসনামলে জেলে কাটালেও আওয়ামী লীগের এই আমলে জেল থেকে ছাড়া পান এরশাদ। সরকারের অংশীদারও হন। কিন্তু সরকারের তিন বছর যাওয়ার আগেই সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন তিনি। জোট বাঁধেন বিএনপির সঙ্গে। অবশ্য দলের মহাসচিব আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বে দলে ভাঙন তৈরি হয় এবং মঞ্জু সরকারের সঙ্গেই থেকে যান।
সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে ১৯৯৯ সালে গড়ে উঠে চারদলীয় জোট। বিএনপির নেতৃত্বাধীন এ জোটে যোগ দেয় এরশাদের জাতীয় পার্টি, জামায়াত ও ইসলামি ঐক্যজোট। ওই বছর ৬ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ, জামায়াতের আমির গোলাম আযম ও ইসলামি ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ফজলুল হক আমিনী সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জোটের ঘোষণা দেন। অবশ্য এরশাদ এই জোটে বেশি দিন থাকতে পারেননি। তাঁকে জোট ছাড়তে হয়। সে সময় তাঁর দলে আবারও ভাঙন ধরে। নাজিউর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে একটি অংশ চারদলীয় জোটের অংশ হয়ে থেকে যায়।
এরশাদ যখন চারদলীয় জোটে যোগ দেন, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এরশাদ রাজপথে থাকবেন, না রাজঘরে (জেলে), সেটা নির্ভর করবে এরশাদের ওপর। এরশাদকে জেলে যেতে হয়, আবার বেরিয়েও আসেন। সঙ্গে বেরিয়ে আসেন চারদলীয় জোট থেকেও।
পরে এরশাদ ইসলামপন্থী কয়েকটি দল নিয়ে গঠন করেন ইসলামি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
আওয়ামী লীগের এ আমলে চারদলীয় জোট সক্রিয় ছিল ২০০১ সালের নির্বাচন পর্যন্ত। আওয়ামী লীগ নির্বাচন করে এককভাবে। আর বিএনপি জোটবদ্ধভাবে। এরশাদ করেছেন ইসলামি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে। নির্বাচনে বিএনপি ও চারদলীয় জোট নিরঙ্কুশ বিজয় পায়। বিএনপি ১৯৩, জামায়াত ১৭, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ৪ ও ইসলামি ঐক্যজোট ২টিসহ জোটগতভাবে ২১৬টি আসন পায়। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ পায় ৬২টি আসন। এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৪, কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ১, জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) ১ ও স্বতন্ত্র ৬টি আসন পায়।
এই নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বে বিশাল বিজয়ে জোটের রাজনীতিই বড় ভূমিকা রেখেছিল বলে বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যায় ধরা পড়ে। আগের নির্বাচনে বিএনপির কাছ থেকে জামায়াতকে আলাদা করে আওয়ামী লীগ সাফল্য পেলেও এই নির্বাচনে বিএনপি জামায়াতকে কাছে টেনে নেয়। বিএনপি ৪০ দশমিক ৯৭ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় ১৯৩টি। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ ৪০ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট পেয়েও আসন পায় মাত্র ৬২টি।
নির্বাচনে বড় জয়ের পর সরকার গঠন করে চারদলীয় জোট। তবে জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতা মন্ত্রিসভায় স্থান পেলেও অন্য দুই শরিক দল থেকে কেউই স্থান পাননি। ইসলামি ঐক্যজোট থেকে আল্লামা আজিজুল হককে মন্ত্রী করার আলোচনা শোনা গেলেও জোটের আরেক নেতা ফজলুল হক আমিনীর সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্বের কারণে তা ভন্ডুল হয়ে যায়। এই দ্বন্দ্বের জের হিসেব জোট থেকে বেরিয়ে যান আজিজুল হক।
এই সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য নতুন ছক কষে আওয়ামী লীগ। ভোটের হিসাব–নিকাশও ছিল তাতে। এ সময় ১৪–দলীয় জোট গঠিত হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। মূলত, বাম ও প্রগতিশীল দলগুলো ছিল এর অংশীদার।
এই সময় জোট রাজনীতিতে এরশাদকে নিয়ে শুরু হয় নতুন খেলা। প্রধান দুই জোটের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন এরশাদ। এরশাদ কখনো চারদলীয় জোট, কখনো ১৪–দলীয় জোটের সঙ্গে থাকার কথা বলে রাজনীতিতে নিজের অবস্থানকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার চেষ্টা চালান।
চারদলীয় জোটের শাসনের শেষ দিকে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে সাংঘর্ষিক অবস্থানে চলে যায় প্রধান দুই জোট। বিক্ষোভ সংঘর্ষে টালমাটাল অবস্থা তৈরি হয়। নানা বিতর্কের পর রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানের দায়িত্ব নেন। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নবম সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগ এরশাদ ও খেলাফত মজলিসকে সঙ্গে নিয়ে ১৪–দলীয় মহাজোট গঠন করে।
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ক্ষমতায় আসে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তাদের প্রায় দুই বছরের কার্যকাল শেষে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচনকে সামনে রেখে চলে জোট গড়া আর ভাঙার তৎপরতা। ২০০৬ সালের ২৬ অক্টোবর বিএনপি নেতা কর্নেল অলি আহমদের নেতৃত্বে গঠন করা হয় এলডিপি। বিএনপির শতাধিক নেতা এতে যোগ দেন। জামায়াতবিরোধী দুটি ইসলামি জোটও হয়। ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, মাইজভান্ডারির তরিকত ফেডারেশন এবং বি. চৌধুরীর বিকল্পধারার সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। একপর্যায়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যান মাইজভান্ডারি। ড. কামালও বেরিয়ে যান ঐক্যফ্রন্ট থেকে। সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে তাঁরা আবারও সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেন। গঠন করেন জাতীয় যুক্তফ্রন্ট। গণফোরাম ও বিকল্পধারার পাশাপাশি এ দলে ছিল ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর পিডিপি, জেনারেল ইব্রাহিমের কল্যাণ পার্টি ও বাংলাদেশ ফরোয়ার্ড পার্টি।
আওয়ামী লীগ মহাজোট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নেয়। তাদের সঙ্গী ১৪ দল, এরশাদের জাতীয় পার্টি, এলডিপি ও খেলাফত মজলিস। আর বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট। মহাজোট গঠনের ফল পাওয়া যায় হাতে হাতে। নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে আসে মহাজোট। মোট ২৬২ আসনে বিজয়ী হয় মহাজোটের শরিকেরা। আর চারদলীয় জোট পায় ৩৩টি। এর মধ্যে ৪৯ শতাংশ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ পায় ২৩০ আসন। ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জাতীয় পার্টি ২৭, জাসদ ৩ ও ওয়ার্কার্স পার্টি পায় ২টি আসন। বিএনপি ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় ৩০টি। জামায়াত ৪ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় ২টি।
এই চারটি নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভোটের রাজনীতির কথা মাথায় রেখে জোট গঠন বা সম্প্রসারণ করেছে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল। তার ফলও পেয়েছে তারা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরেও জোটের সমীকরণে নানা মেরুকরণ হয়েছে। এই মেরুকরণকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছেন রাজনীতি গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ। তিনি মনে করেন, যে জোট হয়েছে, তাতে অনেক দলের ভোট না থাকলেও তাদের কিছু নেতার ‘ফেস ভ্যালু’ আছে। সেটা ভোটের রাজনীতিতে বড় প্রভাব না ফেললেও জোটগুলোকে কিছু সুবিধা হয়তো দিতে পারে। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনী জোটগুলোয় আদর্শের ছিটেফোঁটাও নেই। নির্বাচনে জেতাই তাদের লক্ষ্য। আর এই জোট কতটা প্রভাব ফেলেছে, সেটা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচন পর্যন্ত।