ক্রাইমবার্তা রিপোট: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনশ’ আসনে প্রার্থী হিসেবে টিকে রইলেন ২ হাজার ২৭৯ জন।৭৮৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
বাতিলের খাতায় বেশিরভাগই বিএনপি ও তাদের নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী। রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান, মীর নাসিরসহ প্রথম সারির বহু নেতা।
মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ের পর আওয়ামী লীগের বৈধ প্রার্থী ২৭৮জন। আর বিএনপির রয়েছেন ৫৫৫জন।
দেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু ঢাকায় বিএনপির বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লা আমান, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন প্রমুখ।মূলত মামলা ও ঋনখেলাপির অভিযোগে তাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।
তবে শত বাধা বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ভোটের মাঠে টিকে রয়েছেন বিএনপি ও জোটের বেশ কয়েকজন নেতা।তাদের নামে রয়েছে কয়েকশ’ মামলা।এমনকি তাদের কেউ কেউ শতাধিক মামলার আসামি।
এরা ভোটের মাঠে টিকে আছেন।শেষ পর্যন্ত থাকবেন, কর্ম সমর্থকদের এই প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছেন।
এসব নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকার সাবেক মেয়র ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, মহানগর বিএনপি নেতা নবী উল্লা নবী, আহসান উল্লাহ হাসান, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, এস এম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
সাইফুল আলম নীরব
ঢাকায় বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে যুবদল সভপতি সাইফুল আলম নীরব মামলায় এগিয়ে। তার মামলার সংখ্যা ২৬৭টি। তিনি ঢাকা-১২ আসনে বিএনপির প্রার্থী।
রোববার ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসার কে এম আলী আজম সাইফুল আলম নীরবের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।
এত মামলা নিয়ে নীরব কিভাবে বৈধ প্রার্থীর এর ব্যাখ্যায় এই রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, যুবদলের এই নেতার বিরুদ্ধে দুই শতাধিক মামলা থাকলেও তার কোনো ঋণ খেলাপের তথ্য নেই। মনোনয়নপত্রের অন্যান্য সব তথ্য ঠিক আছে।
নবী উল্লাহ নবী
ঢাকার প্রার্থীদের মধ্যে মামলার দিক থেকে দ্বিতীয় মহানগর বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবী।তার মামলার সংখ্যা ১২১টি।তিনি ঢাকা-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী।তিনি ব্যাংকের ঋণ খেলাপী না হওয়া মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এস এম জাহাঙ্গীর
মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর।ঢাকায় বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে মামলার দিক থেকে তিনি তৃতীয়। তার মামলার সংখ্যা ১৩৮টি। তিনি ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী।
হাবিবুর রশিদ হাবিব
হাবিবুর রশিদ হাবিব ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।তিনি প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা-৯ আসনে।
ঢাকায় ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে মামলার দিক থেকে তিনি চতুর্থ। তার মামলার সংখ্যা ৮০টি।
আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার
ঢাকায় বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া সৌভাগ্যবানদের মধ্যে রয়েছেন ডিসিসির সাবেক কাউন্সিলর আনোরুজ্জামান আনোয়ার।তিনি ঢাকায় বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে মামলার দিক থেকে পঞ্চম। তার মামলা ৭২টি। তিনি ঢাকা-১২ আসনে বিএনপির প্রার্থী। এই আসনে সাইফুল আলম নীরবকেও মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকার সাবেক মেয়র মির্জা আব্বাস। রাজধানীতে বিএনপির রাজনীতির অন্যতম দিকপাল তিনি। আব্বাস এবার ঢাকা-৮ ও ঢাকা-৯ আসন থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। দল তাকে মনোনয়নও দেয়। কিন্তু ঢাকা-৯ আসনে তার মনোনয়নপত্র গৃহীত হয়নি।
তাই ঢাকা-৮ আসনে তিনি ভোট করছেন। ঢাকায় বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে মামলার দিক থেকে তিনি ষষ্ঠ। তার বিরুদ্ধে ৪২টি মামলা রয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের অন্যতম শরিক জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারী ডা. শফিকুর রহমান।তিনি ঢাকা-১৫ আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন পেয়েছেন। ঢাকায় ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে মামলার দিক থেকে ডা. শফিকুর রহমান ৭ম। তার বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা রয়েছে।
আহসান উল্লাহ হাসান
মহানগর বিএনপি নেতা আহসান উল্লাহ হাসান ডিসিসির সাবেক কাউন্সিলর। তিনি ঢাকা-১৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী। মামলার দিক থেকে তিনি যুগ্মভাবে সপ্তম। তার বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা রয়েছে।
শামসুল হক
এ জি এম শামসুল হককে ঢাকা-১১ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। তিনি ঢাকায় ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে মামলার দিক থেকে ৮ম। তার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে।
আবদুস সালাম
অবিভক্ত ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম।তিনি বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা।তিনি প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা-১৩ আসনে।ঢাকায় ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে মামলার সংখ্যার দিক থেকে তিনি নবম। তার মামলা ১৭টি।
আসাদুজ্জামান রিপন
আসাদুজ্জামান রিপন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে বিএনপির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য। তিনি ঢাকা-১৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী। এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানও প্রার্থী। মামলার দিক থেকে তিনি দশম। ১০টি মামলার আসামি তিনি।
আমিনুল হক
সাবেক ফুটবলার আমিনুল হক বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক। তিনি এবার প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা-১৪ আসনে। ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে মামলার দিক থেকে তিনি ১২ তম। তার মামলা ৬টি।এই আসনে বিএনপির অপর প্রার্থী মুন্সি বজলুল বাসিদ আঞ্জুর মামলা ১১টি।
রুহুল আলম চৌধুরী
তবে ঢাকা-১৭ আসনে বিএনপি থেকে মনোনীত দুই প্রার্থী ফরহাদ হালিম ও রুহুল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।