তরিকুল ইসলাম, যশোর: যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর-সদরের বসুন্দিয়া) আসনে শাসক জোটের পক্ষে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য ইকবাল কবির জাহিদকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে দলটি।
এর আগে জাতীয় পার্টিও আসনটি দাবি করে। যদিও আওয়ামী লীগ বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিতকুমার রায়কে ফের মনোনয়ন দিয়েছে যশোর-৪ আসনে; যার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।
বুধবার দুপুরে জেলা ওয়ার্কার্স পার্টি অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে এই দাবি তুলে ধরা হয়। দাবির পক্ষে কিছু যুক্তিও সামনে আনা হয়। বলা হয়, ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য দুর্নীতি, অনিয়ম, গণহয়রানি, রাজাকার তোষণে বিতর্কিত। এলাকার উন্নয়নে তার কোনো ভূমিকা নেই।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সেক্রেটারি জিল্লুর রহমান ভিটু। এতে বলা হয়, ‘এই এলাকার সংসদ সদস্য জনগণের মৌলিক সমস্যা সমাধানে কোনো ভূমিকা রাখেন না। উপরন্তু তিনি সংকীর্ণ ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সকল ধরনের গণস্বার্থবিরোধী কার্যকলাপ করেছেন। দুর্নীতি, অর্থবাণিজ্য, অনিয়ম ও গণহয়রানি করে নিজের আখের গুছিয়ে চলেন; যা সরকারের ভাবমূর্তিকেও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করছে। জনগণ তার প্রতি বিক্ষুব্ধ। তার গণবিরোধী ভূমিকার ফিরিস্তি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে অবহিত করে জনবিচ্ছিন্ন ব্যক্তিকে মনোনয়ন না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন বলে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।’
‘‘আসন্ন সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রসঙ্গে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘোষণা, ‘আমলনামা দেখে মনোনয়ন দেওয়া হবে। দুর্নীতির সাথে জড়িতদের মনোয়নয়ন দেওয়া হবে না।’ এই ঘোষণার মাধ্যমে এই এলাকার মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল, এবার হয়তো তারা মুক্তি পাবেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করা গেল, আমলনামা, জরিপ, জনগণের মতামতের কোনো মূল্য পেল না। আবার সেই একই ব্যক্তিকে মনোয়নয়ন দেওয়া হলো। এঘটনায় এ এলাকার মানুষ হতাশ, হতবাক ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে। যে ব্যক্তি যুদ্ধাপরাধী আমজাদ রাজাকারসহ বিএনপি-জামাতিদের পুনর্বাসিত করছেন, নিজের দলসহ স্বাধীনতার পক্ষের রাজনীতিকে কলুষিত করছেন, তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হলো। এক্ষেত্রে ১৪ দলের শরিক ও মহাজোটের মতামত আমলে আনা হয়নি; যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও জোট-সংস্কৃতির সাথে সংগতিপূর্ণ নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে যশোর-৪ আসনের অর্থনৈতিক গুরুত্বের পাশাপাশি সংকটের দিকগুলো তুলে ধরা হয়। বলা হয়, নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যের কোনো ভূমিকা না থাকায় অঞ্চলটি অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার। সেই কারণে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে মহাজোট শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ইকবাল কবির জাহিদকে ওই আসনে মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল কবির জাহিদ, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাকির হোসেন হবি, অধ্যাপক ইসরারুল হক, বৈকুণ্ঠবিহারী রায়, শ্রমিক ফেডারেশনের নাজিম উদ্দিন, ইউনুস তালুকদার, কৃষক সমিতির মিজানুর রহমান, যুবমৈত্রীর অনুপকুমার পিন্টু, ছাত্রমৈত্রীর শ্যামল শর্মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টিও (এরশাদ) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই আসনটি দাবি করে।#