ক্রাইমর্বাতা রিপোট::সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা ১- তালা কলারোয়া আসনে বর্তমান সংসদ সদস্যের আয় বেড়েছে দশগুণ। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সময় দাখিলকৃত হলফনামায় তার নামে অস্থাবর সম্পদ ছিল এক লক্ষ টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল। বার্ষিক আয় ছিলো ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনের পর তার বার্ষিক আয় বেড়ে দাড়িয়েছে ২৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৪৬ টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলকৃত হলফনামায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। অন্য দিকে ১৬টি মামলা মাথায় নিয়ে তার প্রতিদ্বন্দিতা করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বির্ষয়ক সম্পাদক ২০ দলীয় জোটের একক প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব।
সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসন থেকে আওয়ামী লীগের ৫ জন বিদ্রোহীসহ বিভিন্ন দল থেকে ১৪জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। এর মধ্যে ১৪ দল মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহর ৫ বছরে প্রায় ১০গুণ আয় বেড়ে কোটিপতি হয়েছেন। এই পাঁচ বছরে তার বেড়েছে অস্থাবর সম্পদ।
অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ: সংসদ সদস্য হিসেবে ভাতা পেশা দেখিয়েছেন ১৪ দল মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলবি। তার বার্ষিক আয় তার বার্ষিক আয় ২৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৪৬ টাকা। ১৪ দল মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহর ৫বছরে কোটিপতি হয়েছেন। এই পাঁচ বছরে তার বেড়েছে অস্থাবর সম্পদ। তার নামে এক কোটি ৪ লক্ষ ৫০ হাজার ৩৭০ টাকার অস্থাবর সম্পদ ও ১১ লক্ষ ৪২ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তার নামে নগদ ৪৭ লাখ ১২ হাজার ৮৮৮ টাকা, ব্যাংকে জমা ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪০২ টাকা, ৪৪ লাখ ৬৭ হাজার ৮০ টাকা মূল্যের প্যারাডো জিপ ও একটি এক লাখ টাকা মূল্যের মোটরসাইকেল, ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ল্যাপটপ, টিভি, ফ্রিজ ও এসি, এক লাখ টাকার আসবাবপত্র ও ২ লাখ ৬৮ হাজার টাকার পিস্তল ও পয়েন্ট ২২ রাইফেল রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নামে ১২ হাজার টাকা মূল্যের অকৃষি জমি ও ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের বাড়ি রয়েছে।
অন্যদিকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সময় দাখিলকৃত হলফনামায় তার নামে অস্থাবর সম্পদ ছিল এক লক্ষ টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল। বার্ষিক আয় ছিলো ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। সেই হিসেব মতো তার বার্ষিক আয় বেড়েছে ১০ গুণের বেশি।
এদিকে কৌশলগত কারণে বিএনপি থেকে হাবিবুল ইসলাম হাবিব ও তার স্ত্রী শাহানারা পারভীন বকুল মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। অস্থাবর সম্পত্তির দিক দিয়ে সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের চেয়ে স্ত্রীর তার চেয়ে এগিয়ে আছেন। মামলার দিক দিয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন হাবিবুল ইসলাম হাবিব। তার নামে হত্যাসহ ১৬টি মামলা রয়েছে।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জমা দেওয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়র শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ১৫.৫ বিঘা কৃষি জমিতে এগিয়ে আছেন।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দীদার বখ্ত ও তার স্ত্রীর কোটি টাকার সম্পদ আছে। নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের জমা দেওয়া মনোয়নপত্রের হলফনামা থেকে এমন তথ্য মিলেছে।
হাবিবুল ইসলাম হাবিব: সাতক্ষীরা-১ আসনের বিএনপি জামায়াত মনোনিত প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে এমএসসি পাশ। তিনি ঠিকাদার পেশায় যুক্ত আছেন। এছাড়া কৃষি খাত, বাড়ি ভাড়া ও ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ২০ লক্ষ ৬৫ হাজার ৯৭৭ টাকা। এছাড়া তার স্ত্রীর বার্ষিক আয় ৫ লক্ষ ৫৭ হাজার ৬৭৩ টাকা। এছাড়া তার অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজ নামে নগদ ১৫ লক্ষ ৭১ হাজার ৮০৩ টাকা, ব্যাংকে জমা ২০ লক্ষ ২৮ হাজার ৪৭৭ টাকা, ১০ ভরি স্বর্ণ, ১ লক্ষ টাকার আসবাবপত্র ও ১৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার ট্যাংকলরি রয়েছে। তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ ৩৭ লক্ষ ৩০ হাজার ৮৮৯ টাকা, ১৫ লক্ষ টাকার এফডিআর, ৮ লক্ষ টাকার পাইভেট কার, ১০ ভরি স্বর্ণ ও ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সাথে দাখিলকৃত হলফনামায় তিনি এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন।
তার নামে হত্যা, হত্যার প্রচেষ্টা, চাঁদাবাজি, বিস্ফোরক দ্রব্য মাদক, প্রতারণা, দুর্নীতি, অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১৬টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে সাতটির কার্যক্রম স্থগিত, পাঁচটি বিচারাধীন ও চারটি তদন্তাধীন রয়েছে।
হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, জেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি হাবিব ২ দশমিক সাড়ে ১১ একর কৃষি জমি, ৪৪ দশমিক ৭৫ শতক অকৃষি জমি, পৈত্রিক ভিটায় ২ তলা বাড়ি ও রাজধানীর বনানীতে ৬তলা একটি ভবনের মালিক। এছাড়া তার স্ত্রীর নামে ৮ বিঘা কৃষি জমি ও ধানমন্ডিতে একটি বাড়ি রয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব বর্তমানে এক কোটি ২৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩২৭ টাকা ঋণী।
মুজিবুর রহমান: সাতক্ষীরা-১ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়র শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ৭১ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ ও ১৫.৫ বিঘা কৃষি জমিসহ ২ লাখ ৭৪ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্রের সাথে দাখিলকৃত হলফনামায় তিনি এসব তথ্য উল্লেখ করেন।
সৈয়দ দীদার বখ্ত: : সাতক্ষীরা-১ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রাথী সৈয়দ দীদার বখ্তের নামে ১০ তোলাসহ ১২ লাখ ৩৯ হাজার ৯৬০ টাকার অস্থাবর ও ১৭ দশমিক ৯৭ একর জমিসহ ৩২ লাখ ৪২ হাজার ১৪৪ টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এমএ পাশ সৈয়দ দীদার বখ্ত পেশায় কলাম লেখক ও সাংবাদিক। হলফনামায় বলা হয়েছে, তার বাৎসরিক আয় কৃষিখাতে ১ লাখ ২ হাজার ৫শ টাকা ও বাড়ি/দোকান ভাড়া থেকে আয় ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে, ব্যাংকে জমা ১২ লাখ ৩৯ হাজার ৯৬০ টাকা ও ১০ তোলা স্বর্ণ রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৭ দশমিক ৯৭ একর কৃষি জমি ও ৩২ লাখ ৪২ হাজার ১৪৪ টাকার বাড়ি রয়েছে।
তার স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ব্যাংকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা, ২০ লাখ ৫১ হাজার ১শ ৪৯ টাকার এফডিআর, ১০ লাখ ২০ হাজার ২৬৬ টাকার আসবাবপত্র ও ৩৫ লাখ ৪২ হাজার ১ শত ৪৪ টাকার অন্যান্য সম্পদ রয়েছে।
আসনটিতে জামায়াতেরও শক্ত অবস্থান রয়েছে। জোট গতভাবে নির্বাচনের কারণে আসনটি বিএনপিকে ছেড়ে দিতে হয়েছে বলে জামায়াত নেতারা জানান। আসনটিতে বিএনপি ও জামায়াত এক সাথে কাজ করতে পারলে কেউ সরকারী টাকা লুটে রাতা রাতি কোটি পতি হতে পারবে না বলে জোট নেতারা জানান
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …