ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ বিএনপির সঙ্গে শনিবার (৮ ডিসেম্বর) রাতভর আলোচনা আর উত্তেজনা শেষে ২২ আসনই মেনে নিতে হলো জামায়াতকে। তবে জোটগত মনোনয়নের বাইরে দুটি আসনে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে বিএনপি। এক্ষেত্রে এই দুটি আসনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা পৃথকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে জামায়াত চাইছে আরও অন্তত দুটিতে উন্মুক্ত প্রার্থিতা করতে। আজ রবিবার এই আসনগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
জামায়াতের নেতারা বলছেন, বরাবরই জামায়াতকে ছাড় দিতে হয়। একাদশ নির্বাচনে বেশি ছাড় দিতে হয়েছে। এক্ষেত্রে দর কষাকষি করলেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিএনপির অটল অবস্থান ও টানা অনুরোধের কারণে রবিউল বাশার (সাতক্ষীরা-৩), ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী (সিলেট-৫), হাবিবুর রহমান (সিলেট-৬) আসনগুলোতে ছাড় দিতে হলো।
জানতে চাইলে জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ‘আমাদের তো বরাবরই কোরবানি হতে হয়। আমাদের তিনটি সিট কম দিয়েছে। তদবির করার পরও তিনটি দিলো না, ২২টি পেলাম।’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য জানান, ২৫টি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে প্রাথমিক মনোনয়ন পেলেও শেষ মুহূর্তে এসে তিনটি আসন না দিতে জোর আপত্তি জানায় বিএনপি। জামায়াতকে বলা হয়েছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তিনটি আসনে কোনও ছাড় দেওয়া যাবে না।
সিলেট জামায়াতের নেতারা বলছেন, সিলেট ৫ – এ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী তাদের উইনিং ক্যান্ডিডেট। তার জায়গায় জমিয়তের (কাশেমী অংশ) উবায়দুল্লাহ ফারুককে মনোনয়ন দেওয়ায় জেতার বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। বিগত নির্বাচনে উবায়দুল্লাহ ফারুকের ভোটপ্রাপ্তির সংখ্যা ছিল খুব কম।
সিলেট-৬ আসনে ধানের শীষের প্রাথমিক মনোনয়ন পেলেও চূড়ান্ত মনোনয়ন পাননি সিলেট জেলা দক্ষিণের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ তিনটি আসন আমাদের হাতছাড়া হলো, ফরিদ উদ্দিন সাহেবেরটাও হয়েছে, আমারটাও হয়েছে। এটা আমরা মেনে নিলাম, শেষ পর্যন্ত দেশে নির্বাচন ছাড়াতো কোনও উপায় নেই। দুঃখজনক হলেও মেনে নিয়েছি দেশের স্বার্থে, ভবিষ্যতের স্বার্থে, আমরা মনে আঘাত পেয়েছি। কিন্তু এখানে যাতে দেশ ও জাতির ক্ষতি হোক, এমন কিছু তো করতে পারি না আমরা।’
এদিকে, জামায়াত প্রার্থীদের ২২টি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দিলেও দুটি আসনে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে বিএনপি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৫টি আসনে (চাপাই-৩, রাজশাহী-৩, সিরাজগঞ্জ-৪, ঝিনাইহদ-৩, মেহেরপুর-১) এবং ২০০১ সালে একটি আসনে (চট্টগ্রাম-১৫ তৎকালীন ১৪) উন্মুক্ত প্রার্থিতা করেছিল জামায়াত। যদিও একটি অাসনে বিজয়ী হয় জামায়াত।
এ বিষয়ে জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার ব বলেন, ‘বিএনপি কিছু আসনে উন্মুক্ত নির্বাচনের বিষয়ে একমত হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি সংখ্যাটা বাড়িয়ে নিতে। আলোচনা চলছে। বিকালের মধ্যে একটা সমাধানে আসা যাবে আশা করছি।’