কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব পাস
• ভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে রাজনৈতিক দল ও বিচারিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস
• প্রস্তাবে বাংলাদেশের নির্বাচন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং রোহিঙ্গাদের বিষয়ে চারটি প্রসঙ্গ এসেছে
বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে এবং ভোটারদের বাধাহীন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দল ও বিচারিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। গত বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়া প্রস্তাবটিতে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
মার্কিন কংগ্রেসের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কংগ্রেস সদস্য টেড ইয়োহো, এলিয়ট এনজেল, ব্র্যাড শেরমান, স্টিভ শাবট, জেরাল্ড কনোলি ও ড্যারেন সোটোর উদ্যোগে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া এই প্রস্তাবে বাংলাদেশের নির্বাচন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং রোহিঙ্গাদের বিষয়ে চারটি প্রসঙ্গ এসেছে।
প্রথম প্রস্তাবে কংগ্রেস সদস্যরা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। দ্বিতীয় প্রস্তাবে বাংলাদেশের সরকারকে মতপ্রকাশের ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে বলেছে। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে সরকারকে সাড়া দিতে বলেছেন।
তৃতীয় প্রস্তাবে নির্বিঘ্ন ভোটাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। এ প্রসঙ্গে ভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে এবং নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে তাঁরা রাজনৈতিক নেতা ও বিচারিক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন। সেই সঙ্গে কংগ্রেস সদস্যরা আশা করেছেন, আসন্ন নির্বাচন নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে।
শেষ প্রস্তাবে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গটি এনেছেন। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার কারণে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মনুষ্যসৃষ্ট মানবিক এই বিপর্যয়ের মতো জটিল পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়টিও প্রস্তাব পাসের সময় আলোচনায় এসেছে। এ নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা বলছেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মানবাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ প্রতিহত করতে এবং মানবাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অসাম্প্রদায়িকতা সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হওয়া উচিত বলে মনে করছেন কংগ্রেস সদস্যরা