ক্রাইমবার্তা রিপোট : মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে বিজয় র্যালি করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।বিজয় র্যালি হলেও এই শোভাযাত্রায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান উচ্চারিত হয় বারবার। নেতাকর্মীদের মুখে মুখে ছিল ‘আমার নেত্রী আমার মা, জেলে থাকতে দেব না’।
রোববার পূর্বঘোষণা অনুযায়ী দুপুর পৌনে ১২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালিটি বের হয়। শান্তিনগর মোড় ঘুরে ফের নয়াপল্টনে এসে শেষ হয় এটি।
জাতীয় ঐকফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিজয় র্যালির উদ্বোধন করেন।
বিজয় র্যালি হলেও এই শোভাযাত্রা নির্বাচনী প্রচারে রূপ নেয়।র্যালিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষ শোভা পায় উপস্থিত নেতাদের হাতে হাতে।
র্যালিতে অংশ নেয়া নেতাকর্মীদের মুখে মুখে ছিল, ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই’, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘আমার নেত্রী আমার মা, জেলে থাকতে দেব না’, ‘৩০ ডিসেম্বরের মার্কা কী?— ধানের শীষ’, ‘১৬ ডিসেম্বরের মার্কা কী?—ধানের শীষ’, ‘সারাদেশের মার্কা কী?— ধানের শীষ’, ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া লও লও লও সালাম’ ইত্যাদি।
একটা খোলা পিকআপ ভ্যানে চড়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের সুব্রত বড়ুয়া, ঢাকা-১৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আব্দুস সালাম। বিএনপির নেতাদের পাশাপাশি সুব্রত চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্নার হাতেও ছিল ধানের শীষ।
পেছনে আরেকটি খোলা ট্রাকে ঢাকা-৯ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী মহিলা দল সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস র্যালিতে অংশ নেন। পুরো র্যালিতে দুই হাতে ধান গাছের ছড়া প্রদর্শন করেন আফরোজা আব্বাস।
র্যালির সামনের ভাগে ছিলেন মহিলা দলের নেতাকর্মীরা।ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারাও এতে অংশ নেন।
পূর্ব নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টা খানেক পর শুরু হওয়া র্যালিতে সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
র্যালি পূর্ব বক্তৃতায় বক্তাদের বক্তৃতায় স্থান পায় খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি।
একাদশ নির্বাচনকে দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রে থাকবে নাকি দেশে গণতন্ত্রে ফিরবে। মানুষ স্বাধীনতার ফল ভোগ করতে পারবে কি, পরাধীনতার জিঞ্জিরে আবদ্ধ থাকবে। তাই এই নির্বাচনকে প্রহসনের হতে দেয়া হবে না।
এই নির্বাচনের সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি নির্ভর করছে এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের ভোটেই সিদ্ধান্ত হবে আমাদের গণতন্ত্রের নেত্রী, আপোসহীন নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে এই অন্যায়-অত্যাচার থেকে মুক্ত করতে পারবো কি পারবো না।
বিজয়ের দিনে মানুষের মুখে হাসি নেই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ বিজয়ের দিনে আমাদের আনন্দিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আমরা আজকে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত, আজকে আমরা আতঙ্কিত ও উৎকণ্ঠিত। এই দেশে গণতন্ত্র টিকে থাকবে কি থাকবে না এ নিয়ে।’
ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আজ বিজয়ের দিন। আর আমরা একটা লড়াইয়ের মধ্যে আছি। এ লড়াই হলো ভোটের লড়াই।
দশম জাতীয় নির্বাচনে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে এমন মন্তব্য করে মান্না বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এই দেশে ভোটের নামে একটি প্রহসন হয়েছে। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত করেছি, এবার ওয়াকওভার দেবো না। তাই সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।সরকার একের পর এক নির্যাতন করছে বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর।
র্যালিতে আরও অংশ নেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, ঢাকা-৪ আসনের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, জাসাস সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খানসহ ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিকদল, জাসাসসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা