ক্রাইমর্বাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় আচারণ বিধি লঙ্গন করে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহ রয়েছে। যাদের নামে মামলা নেই অথবা ওয়ারেন্ট নেই তাদেরকে আটক করা হচ্ছে। তবে পুলিশের দাবী ভিন্ন।
পুলিশের দাবী নাশকতার অভিযোগে গত তিন দিনে সাতক্ষীরাতে ১৯৩ জনকে আটক করা হয়েছে। শুধু ধানের শীষ প্রতীকের অর্ধশতাধীক নির্বাচনি কর্মীকে আটক করার অভিযোগ করেছে বিএনপি জামায়াত। এসময় তাদের বিরুদ্ধে ১০টি নতুন মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটককৃতদের বেশির ভাগ বিএনপি জামায়াত কর্মীদের নামে থানাতে কোন ওয়ারেন্ট কিম্বা মামলা ছিল না বলে জানায় বিএনপি জামায়তের একাধীক নেতা।
এদিকে তফসিল ঘোষণার পর একের পর সাতক্ষীরায় ধানের শীষের প্রার্থীরা আচারণ বিভিধ লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। ধানের শীষের ১০টি নির্বাচনি প্রচার মাইক ভাংচুর, পোষ্টা ছেড়া, র্নির্বাচনি প্রার্থী আটক ও মারপিটের অভিযোগ করেন বিএনপির প্রার্থী, হাবিবুল ইসলাম,ডা.শহিদুল আলম,জামায়াতের জেলা আমীর মুফতি রবিউল বাশার ও গাজী নজরুল ইসলাম। জেলা রির্টানিং কর্মকর্তার কাে অভিযোগ দিয়েও তারা কোন প্রতিকার পায়নি বলে অভিযোগ। অন্যদিকে বিএনপি জামায়াত কে দায়ী করে আচারণ বিধি লঙ্গনের পাল্টা অভিযোগ তুলেছে জেলা ১৪ দল। মঙ্গলবার তারা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ অভিযোগ তোলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ১৪ দলীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক সাংসদ মুনসুর আহমেদ। তারা অভিযোগ করেন, সাতক্ষীরায় নৌকার পোস্টার ছিড়ছে জামায়াত ও বিএনপি। তবে আমরা আইন হাতে তুলে নিতে রাজী নই। আমরা কারও পোস্টার ছিড়ছি না। তারা বলেন বিরোধী দল গুজব ছড়াচ্ছে। তারা মিথ্যাকে সত্য বানানোর চেষ্টা করছে। সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও বলেন বিরোধীরা ভোট কেন্দ্র দখল করার হুমকি দিয়েছে। আর আমরা ভোট কেন্দ্র রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।
এদিকে জেলা ব্যাপি গত তিন দিনে ১৯৩ জনকে অটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতদের মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ৫২ জন, কলারোয়া থানা থেকে ৪৪ জন, তালা থানা থেকে ১২ জন,কালিগঞ্জ থানা থেকে ২২ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ২১ জন, আশাশুনি থানা থেকে ২২ জন, দেবহাটা থানা থেকে ১০ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর মেধ্যে সোমবার সন্ধা থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৫৩ জন, রবিবার সন্ধা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ৬৬ জন এবং শনিবার সন্ধা থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত ৭৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সাতক্ষীরা জামায়াত অভিযোগ করেন, জেলাতে জামায়াত নেতা-কর্মীদের বাড়ীতে পুলিশের গ্রেফতার অভিযান এবং পোষ্টার মারার অপরাধে হুমকী-ধামকী ও ভীতি প্রদর্শন করেছে পুলিশ। ধানের শীষের পোষ্টার টাঙানোর অপরাধে সদরের জোড়দিয়া গ্রামের জামায়াত কর্মী আহাদ মল্লিক, আঃ সাত্তার ও শাহিনুর রহমানের বাড়ীতে পুলিশ অভিযান চালায়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাদের কে বাড়ীতে না পেয়ে পরিবারের মহিলা সদস্যদেরকে হুমকী-ধামকী প্রদান করার অভিযোগ উঠে। জোড়দিয়া গ্রামের তেতুল তলা নামক স্থান হতে স্বয়ং পুলিশের বিরুদ্ধে ধানের শীষের পোষ্টার ছিড়ে পায়ের তলায় পিষ্ট করার অভিযোগ তুলেছে স্থানীয়রা।
সোমবার রাতে আলিপুর ইউনিয়নের গাঙনিয়া গ্রামের হাবিবুল্লাহর ছেলে জামায়াত সমর্থক সাইফুল্লাহকে নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। সদরের কুশখালী ইউনিয়নে নিজ বাড়ী হতে গ্রেফতার করা হয়েছে আরো ৩ জামায়াত কর্মীকে। তারা হলেন কুশখালী গ্রামের ৪ নং ওয়ার্ডের আনিস উদ্দীনের ছেলে জামায়াত কর্মী আসাদুজ্জামান (৩৫), বাওকোলা গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে জামায়াতের ওয়ার্ড সভাপতি মোশাররফ হোসেন। আড়ুয়াখালী গ্রামের জামায়াতের সহযোগী সদস্য জিয়ারুল ইসলাম। তাদের কারো নামে কোন মামলার ওয়ারেন্ট ছিলনা বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার।
অন্যদিকে সাতক্ষীরা ৩ নং আসন হতে সোমবার ২ জামায়াত কর্মীকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন আশাশুনির আনুলিয়া ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের মৃত মতিয়ার রহমানের ছেলে জামায়াত কর্মী মোজাম্মেল হক ও শোভনালী ইউনিয়নের বাউচাষ গ্রামের মৃত অজিয়ার রহমানের ছেলে জামায়াতের সহযোগী সদস্য আব্দুল মজিদ। পরিবার সূত্রে জানা যায় তাদের নামে কোন মামলা ছিলনা। নতুন মামলায় তাদেরকে চালান দেওয়া হয়েছে। দেবহাটার কুলিয়া ইউনিয়নের বহেরা গ্রামের হায়দার শাহরীর ছেলে জামায়াত কর্মী ওয়াহাব শাহরী তার দৈনন্দিন কাজ খেজুর গাছকাটতে গেলে রাস্তার ধার হতে তাকে আটক করে নিয়ে যায় দেবহাটা থানা পুলিশ।
সাতক্ষঢীরা ৪ শ্যামনগর আসন শ্যামনগরেও থেমে নেই গ্রেফতার আতঙ্ক। শশুর বাড়ী বেড়াতে যেয়ে গতকাল বিকালে গ্রেফতার হয়েছেন ভুরুলিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারী হাবিবুর রহমান (৫০)। তার নামে কোন মামলার ওয়ারেন্ট ছিল না বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
সাতক্ষীরা ১ তালা কলারোয়া আসনে কলারোয়া উপজেলার ঝিকরা গ্রাম হতে আটক করা হয়েছে জামায়াতের সদস্য মাও. আব্দুল কুদ্দুসকে। গতরাতে নিজ বাসা হতে তাকে আটক করে কলারোয়া থানা পুলিশ।
Check Also
বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন
দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …