ক্রাইমবার্তা রিপোট: নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও সন্ত্রাসের ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। নির্বাচন ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। কমিশন তা হতে দিতে পারে না।
আজ বুধবার দুপুরে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি কোনো প্রশ্ন নেবো না, কারও প্রশ্নের উত্তরও দেবো না।
এ সময় তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নিজের বিবেচনায় রাজনৈতিক দল, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী, নির্বাচনী কর্মকর্তা ও ভোটারদের উদ্দেশ্যে ৫টি বার্তা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
৫ বার্তায় মাহবুব তালুকদার বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর একটি সহিংসতামুক্ত পরিবেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন না করতে পারলে এই স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে। আমরা তা হতে দিতে পারি না।
ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসুন। আপনার ইচ্ছানুযায়ী প্রার্থীকে ভোট দিন। ভয়ভীতি বা প্রলোভনের কাছে নতি স্বীকার করবেন না।
আপনার একটি ভোট গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ। মনে রাখবেন, এবারের নির্বাচন আমাদের আত্মসম্মান সমুন্নত রাখার নির্বাচন। এবারের নির্বাচন আগামী প্রজন্ম ও আপনার সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যত নির্মাণের নির্বাচন
রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন কেবল অংশগ্রহণমূলক হলে হয় না, নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও আইনানুগ হতে হয়। এছাড়া, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসাবে আমরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারব না। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে আমরা কলঙ্কিত হতে চাই না। নির্বাচনে যিনি বা যারাই জয়লাভ করুন, দেশের মানুষ যেন পরাজিত না হয়।
একইভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে এই জ্যেষ্ঠ কমিশনার বলেন, অতি উৎসাহী হয়ে কোন অনভিপ্রেত আচরণ করবেন না। আপনারা নির্বাচনের সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি। প্রত্যেকের প্রতি সম আচরণ ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন আপনাদের কর্তব্য। নির্বাচনে পক্ষপাতমূলক আচরণ থেকে বিরত থাকুন। নিজেদের পোষাকের মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষা করুন।
এছাড়া রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জাতির ক্রান্তিকালে আপনারা এক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করছেন। বিবেক সমুন্নত রেখে অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সাহসিকতার সঙ্গে আইন অনুযায়ী নিজেদের দায়িত্ব পালন করুন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণে আপনাদের অবদান জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে। কোনো কলুষিত নির্বাচনের দায় জাতি বহন করতে পারে না।