ক্রাইমর্বাতা রিপোট:সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ সাতক্ষীরা সরদ-২ আসনে অর্ধশতাধীক কেন্দ্র থেকে ধানের শীর্ষের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। ৪০টি কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট ঢুকতে দেয়নি পুলিশ ও সরকার দলীয় লোক জন।
আসনটিতে ধানের শীর্ষের প্রাথীর ভোট কেন্দ্র থেকে প্রার্থীর স্ত্রীসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন,২০ দলীয় জোট মনোনিত জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মুহাদ্দীস আব্দুল খালেকের স্ত্রী সাজেদা বেগম, শ্যালক মাওলানা আতিয়ার রহমানও আজিবর রহমান এবং ধানের শীষে পোলিং এজেন্ট রবিউল ইসলাম। আজ সকালে আগারদাড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ধলবাড়িয়া কেন্দ্রো থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
সাতক্ষীরা সদর আসনের ধানের শীর্ষের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য সদর জামায়াতের আমীর মাওলানা শাহাদাত হোসেন এমন অভিযোগ করেন। মুঠো ফোনে তিনি জানান,বেশির ভাগ কেন্দ্রে তাদের পোলিং এজেন্টা ঢুকতে দেয়নি। যারা ঢুকছিল তাদেররে অনেকেরই বের করে দেয়া হয়েছে। তার মতে জামায়াত অধ্যুসিত বাঁশদহা ইউনিয়নের ৮টি কেন্দ্র, কুশখালির ৭টি কেন্দ্র, বৈকারীর ৬টি কেন্দ্র, ঘোনার ৫টি কেন্দ্র, শিবপুরের ৮টি কেন্দ্র,ঝাওডাঙ্গার ১০টি কেন্দ্র এবং বল্লির ৬টি কেন্দ্রে ধানের শীর্ষের কোন ভোটারকে প্রবেশকরতে দেয়া হচ্ছে না। কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট প্রদান করতে বাধ্য করা হচ্ছে। যারা ধানের শীষে ভোট দিচ্ছে তাদের অনেকেরই আটকের খবওর পাওয়া গেছে।
সাতক্ষীরা শহরের ৫ নং ওয়ার্ডের কুকরালি প্রাইমারী স্কুল কেন্দ্রে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইন। সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় সরকার দলীয় লোকজন ও পুলিশ ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট দানে বাধ্য করে বলে কয়েকজন ভোটারা জানান। এ কেন্দ্র থেকে ধানের শীর্ষের সমর্থক মিয়াসাহেবের ডাঙ্গার মোকশেদ আলীর ছেলে আলমগীর ও পারকুরালি গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের দাবী তারা ভোট কেন্দ্রে নাশকতার চেষ্টা করছিল।
একই ওয়ার্ডের কারিমা স্কুল সংলগ্ন প্রাইমারী স্কুলে ভোটারদের দীর্ঘ লাইনে ধানের শীর্ষের ভোটার সন্ধেহে দাড়ি টুপিওয়ালাদের বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভোট দিতে না পেরে ক্ষোভ জানালেন,হাজী করিম বক্স,মাওলানা সিরাজুল,আব্দুল করিম সহ কয়েকজন। ভোট কেন্দ্রটি পরিদর্শন শেষে এমন অভিযোগের সত্যতা মিলল অনেকের কাছ থেকে।
সাতক্ষীরা শহরের কামাল নগর এলাকার আসমানি শিশু নিকেতন কেন্দ্রে ভোট দিতে এতে ব্যাপক মারপিটের শিকার হয়েছেন এড.হাফিজুর রহমান। আ’লীগের ছেলেরা তাকে বলেন, তুই ধানের শীষের লোক। তোকে মেরেই ফেলবো। পরে ১০ থেকে ১২ জনের একটি গ্রুপ তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশের সাহায্য চেয়েও তিনি কোন সহযোগীতা পাননি বলে তার অভিযোগ।
শহরের রসুলপুর, পলাশপোল,আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না বলে কয়েকজন ভোটার জানান। ফলে সকালে শত শত ভোটার কেন্দ্রর বাইরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে ফিরে গেছেন। সদর আসনের বেশিরভাগ কেন্দ্রেই বিএনপি এজেন্টদের ঢুকতে দেয়নি সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা। কেউ কেউ ঢুকলেও তাদের মারধর করে বের করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে এ আসনের বিভিন্ন কেন্দ্রের ভোট দিতে না পেরে ভোটাররা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
রবিবার সকাল ৮টার আগেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। কনকনে শীত উপেক্ষা করে ভোটাররা সকাল ৭টার পরপরই কেন্দ্রগুলোতে এসে অবস্থান নেয়। তারা সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট শুরুর অপেক্ষা করে। কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে ধানের শীষের ভোটাদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা বাড়তে থাকে।
এ আসনে ১৩৭ টি কেন্দ্রে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা সদর আসনে মোট ভোটার তিন লক্ষ ৫৬ হাজার ২৬৮ জন।
এদিকে প্রাথীর নিজ এলাকা ধলবাড়িতে ভোটারদের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে জামায়াতের কর্মী আতিয়ার রহমান,আজিজর রহমন,রবিউল ইসলাম, এবং আ’লীগকর্মী আতাউর রহমান আতাও আবুল হোসেন। আবুল হোসেনের অবস্থা আশঙ্কা জনক। তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আবু সাইদ বিশ্বাস:সাতক্ষীরা : ৩০/১২/১৮