ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের দিন বেশ অনিয়ম হয়েছে বলে জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। সংস্থাটি বলছে, এই নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন ওঠেছে। নির্বাচন কমিশনের উচিৎ সেগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। আজ ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত ‘একদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের তথ্য উপস্থাপন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব অনিয়ম তুলে ধরা হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোটারদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল নির্বাচনের দিনটি। নির্বাচনী প্রচারণাকালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় ভোটের দিনের পরিবেশ স্বাভাবিক থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল। ভোটের দিনে সারাদেশে সহিংসতা পরিলক্ষিত না হলেও সীমিত আকারের সহিংসতায় প্রাণহানি ঘটেছে কমপক্ষে ১৭ জনের। আহত হয়েছে দুই শতাধিক।
এই দিনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিলো, অধিকাংশ এলাকাতেই বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের নির্বাচনের মাঠে অনুপস্থিত। এমনকি বেশিরভাগ কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট-এর অনুপস্থিত।
লিখিত বক্তব্যে সুজন সমন্বয়ক দিলীপ কুমার জানান, নির্বাচনের দিন অনিয়মের অনেক অভিযোগ আমাদের গোচরে এসেছে। অনিয়মগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল- জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পোলিং এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বা মারধর করে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, ভোটের আগের রাতে মহাজোট প্রার্থীদের প্রতীকে ভোট দিয়ে বাক্স ভরে রাখা, বাইরে থেকে ব্যালট ভরা বাক্স ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসা, কোনো কোনো কেন্দ্রে ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যেই ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া, কোনো কোনো ভোটরদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেয়া, ভোটারদের প্রকাশ্যে সিল মারতে বাধ্য করা, দীর্ঘ সময় লম্বা লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকলেও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ না করা, কোনো কোনো কেন্দ্রে অস্বাভাবিক বেশি বা কম ভোট পড়া। এছাড়া ভোট পড়ার ক্ষেত্রে ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ করা আসনগুলোর সঙ্গে অন্যান্য আসনের অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা গেছে।
সুজন বলছে, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেকেই অনিয়মের সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। নির্বাচন চলাকালে ঐক্যফ্রন্টের প্রায় শ’খানেক প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। কমিশনের উচিৎ সেগুলো তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারে উপদেষ্টা ও সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন।