ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ মজুরি বৃদ্ধির পরও অষ্টম দিনের মতো সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিক বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। আজ সকালে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার এনভয় গার্মেন্টস, সেতারা ফ্যাশন, স্টারলিং অ্যাপারেলস, হামিম গ্রুপ ও শারমিন গ্রুপের এম ডিজাইন লিমিটেড সহ প্রায় ২০ টি কারখানার শ্রমিকরা প্রতিদিনের মতো কারখানায় প্রবেশের পর কার্ড পাঞ্চ করে বের হয়ে যান। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ শ্রমিকদেরকে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
শিল্প পুলিশ জানায়, সকালে হা-মীম গ্রুপের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশের পর কাজ না করে বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে সড়কে অবরোধ করে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা শ্রমিকদেরকে বুঝিয়ে কারখানার ভেতরে ঢুকিয়ে দেন। কিন্তু শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে কাজ না করে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন। সকাল ৯ টার দিকে আবারও কিছু শ্রমিক কারখানা থেকে বের হয়ে আসে।
এছাড়া জামগড়া এলাকার পলমল গ্রুপ, এনভয় গ্রুপ সাফা নিটিং সহ প্রায় ২০টি কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় বের হয়ে আসে। এ সময় বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শ্রমিকদের কে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিক্ষোভের কারণ জানতে চাইলে, শাহনাজ ও আক্তারসহ অনেক শ্রমিক জানান, সবাই বের হয়ে এসেছে তাই আমরাও বের হয়ে এসেছি। এছাড়া আমরা ভেতর কাজ করতে গেলে বহিরাগত কিছু লোকজন এসে আমাদের মারধর করে। তাই ইচ্ছা থাকলেও কাজ করতে না পেরে বের হয়ে আসতে বাধ্য হই।
আলপনা নামে একজন অপারেটর জানান, ভেতরে কাজ করলেও নিরাপত্তা পাই না, স্টাফরা আমাদের কে মারধর করে, আবার বাইরে গেলেও একদল লোক আমাদের ওপর হামলা করে। এখন আমরা কি করব বুঝতে পারছি না।
টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কাস ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, শ্রমিকরা কোন কিছু না বুঝেই কারখানা থেকে বের হয়ে আসছে। যেহেতু সরকার মজুরি বৃদ্ধি করেছে তাই এখন শ্রমিকদের কাজে ফিরে যাওয়া উচিত। এরপরও যদি শ্রমিকদের কোন দাবি-দাওয়া থাকে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ রেজাউল হক বলেন, সকালে প্রতিদিনের মতো কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় বের হয়ে এসে অবস্থান নেয়। এ সময় আমরা শ্রমিকদের কে প্রথমে বুঝিয়ে সারানোর চেষ্টা করি। আমাদের কথায় কিছু শ্রমিক রাস্তা থেকে সরে গেলেও অন্যরা বিক্ষোভ অব্যাহত রেখে সড়কে বসে থাকে। এ সময় আমরা লাঠিচার্জ করে তাদেরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয় । বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।
তিনি আরো বলেন জামগড়া নরসিংহপুর এলাকার কয়েকটি কারখানা বাদে শিল্প এলাকার অন্যান্য এলাকার কারখানাগুলো চালু রয়েছে এবং শ্রমিকরা সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন। এছাড়া যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শিল্প পুলিশের পাশাপাশি আমাদের সদস্যরাও প্রস্তুত রয়েছে।