ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সময় থাকতে বর্তমান সরকারকে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। নইলে সরকারের বিপদ হবে বলেও হুশিয়ার দিয়েছেন তিনি।
বুধবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, দ্রুত নিজে পদত্যাগ করে দেশে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিন। সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে এবং জনগণ তাদের অধিকার ফিরে পেতে ঐক্যবদ্ধ।
নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও মন্ত্রীরা বলছেন- ‘এত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বাংলাদেশে আগে কখনও হয়নি। বিএনপি নেতারা পরাজিত হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।’
এ প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের সত্ত্বা ও স্বরূপ বরাবরই মিথ্যা দর্শনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কিত নির্বাচনে পরিণত হয়েছে।
‘সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আগের রাতে ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখা, কৃত্রিম লাইন তৈরি করে ভোটাদের ভোটকেন্দ্রে যেতে না দেয়া, মহাজোট ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া, কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া, ভোটের ফল সরকারদলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ঘোষণা করা, নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয় কারাগারে, নয়তো এলাকাছাড়া করা- এসবই হয়েছে এবারের নির্বাচনে।’
ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীদের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ভুয়া ভোটে এমপি-মন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে এখন বিতর্কিত ও কলঙ্কিত নির্বাচনকে জায়েজ করতে আওয়ামী নেতারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
খোদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আলোচনাকে ভিন্ন খাতে ঘুরিয়ে দিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘গত কয়েক দিন আগে সোহরাওয়ার্দীতে আওয়ামী লীগের জনসভায় ও গতকাল ভুয়া ভোটের সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে তিনি ভোট ডাকাতিকে এড়িয়ে গেছেন, যা দেখে গণমাধ্যমের কর্মীরাও বিস্মিত হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।’
রিজভী বলেন, বিবিসির রিপোর্টে বলা হয়েছে-শনিবারের জনসভায় বহু মানুষের চোখ ছিল- নির্বাচনে কারচুপির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বলেন। কিন্তু তা নিয়ে তিনি একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি।
মূলত ভোট ডাকাতি ধামাচাপা দিতেই এখন প্রধানমন্ত্রী এসব পদ্ধতি অবলম্বন করছেন বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
তিনি বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, রাতের আঁধারে ভোট দিয়ে, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বেআইনি কাজে ব্যবহার করে, বিরোধী দলকে নির্মূল করে, গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান হরিলুট করে এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রেখে শেখ হাসিনা সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন রেখে রিজভী আরও বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে কীভাবে গণতন্ত্রের সমাধিসৌধের ওপর সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান আপনি?