রয়টার্স : খ্রিস্টানপ্রধান দেশ ফিলিপাইনের মিন্দানাও দ্বীপের দুটি মুসলমান অধ্যুষিত এলাকায় গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই এলাকায় স্বায়ত্তশাসন দেয়া উচিত হবে কি না -তা জানতে সোমবার (২১ জানুয়ারি) এ গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ২৮ লাখ ভোটারের এ ভোটের ফল চারদিনের মধ্যে জানা যেতে পারে। তবে ভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ফিলিপাইনের ওই অঞ্চলটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অস্থিতিশীল ও অবহেলিত এলাকাগুলোর একটি। সেখানে পর্যাপ্ত অবকাঠামো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চাকরি সুবিধার অভাব রয়েছে। সরকারি হিসেবে, ফিলিপাইনের দারিদ্র্যের হার শতকরা ২১ দশমিক ৬ হলেও মিন্দানাওয়ের অর্ধেকের বেশি পরিবার দরিদ্রতার শিকার।
শিশুদের মধ্যে স্কুলে যাওয়ার হারও ফিলিপাইনের অন্যান্য এলাকার চেয়ে কম।
বিভিন্ন সময় ওই অঞ্চলের এমন দুরবস্থার সুযোগ নিয়েছে জলদস্যু, অপহরণকারী গোষ্ঠীসহ ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ। আইএস সমর্থনকারী একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ২০১৭ সালে মিন্দানাওয়ের মারাউয়ি শহরের দখল নিয়ে নিয়েছিল। পরে প্রায় পাঁচ মাস অভিযান চালিয়ে শহরটি পুনরায় দখলে নেয় সরকার। তখন থেকে মিন্দানাওয়ে সামরিক আইন জারি রয়েছে।
এক জরিপে বলা হয়, গত শতকের সত্তরের দশক থেকে বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সরকারের সংঘর্ষে অন্তত এক লক্ষ ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এ অবস্থায় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্ট’ বা এমআইএলএফ ও সরকার যৌথভাবে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। সোমবারের গণভোট সেই পরিকল্পনার একটি অংশ।
গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে এমআইএলএফ-এর নেতত্বে ‘বাঙসামরো ট্রানজিশন অথরিটি’ গঠন করা হবে, যা ২০২২ সালের নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবে।
মিন্দানাওয়ের মুসলমানদের ‘বাঙসামরো’ নামে ডাকতো দেশটির স্প্যানিশ ঔপনিবেশিকরা। পরবর্তীতে এলাকাটিও বাঙসামরো নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।
২০২২ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে ৮০ সদস্য বিশিষ্ট একটি সংসদ গঠিত হবে। পরে সংসদই একজন মুখ্যমন্ত্রী বাছাই করবে। বাঙসামরোতে স্বায়ত্তশাসন এলে অঞ্চলটির বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া সহিংসতা, সন্ত্রাসবাদও কমে আসতে পারে।