ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে নিখোঁজের ১৬ ঘণ্টা পর এক স্কুলছাত্রের গলাকাটা লাশ মিলল বাড়ির অদূরে ধানক্ষেতে। তার নাম সিয়াম মাহমুদ (১১)। সে মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের সুলতানাবাদ গ্রামের শাহজাহান গাজীর একমাত্র ছেলে। সে খাটাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ত। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শাহজাহান গাজী বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় নিকটবর্তী সুলতানাবাদ দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে মাহফিল শুনতে যায় সিয়াম। এরপর বাড়ি না ফেরায় অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়। দুপুরে এক শিশু ধানক্ষেতে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে আমাদের খবর দেয়। পরে আড়াইটার দিকে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
শাহজাহান গাজী আরও বলেন, জমি নিয়ে চাচাতো ভাইদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। তাদেরই কেউ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। দুই মাস আগে এক মামলায় আদালত আমার পক্ষে রায় দেন। আদালতে না পেরে আমার জমি হাতিয়ে নিতে তারা এ নৃশংসতা চালিয়েছে। কাউকে বিশেষ সন্দেহ করছেন কিনা জানতে চাইলে শাহজাহান গাজী বলেন, চাচাতো ভাই ইসমাইল গাজী ও করিম গাজী এবং ইসমাইল গাজীর ছেলে জুয়েল গাজীকে। দুপুরে সুলতানাবাদ গ্রামে শাহজাহান গাজীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র ছেলে সিয়ামকে হারিয়ে মা শিল্পী আখতার বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। জ্ঞান ফিরলেই আহাজারি করছেন তিনি। প্রতিবেশী ও স্বজনরা তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুরো এলাকার মানুষ ভিড় করেন ওই বাড়িতে।
প্রতিবেশীরা জানান, শাহজাহান গাজী গ্রামের অবস্থাসম্পন্ন কৃষক। তার সঙ্গে চাচাতো ভাইদের মামলা-পাল্টামামলা রয়েছে। বিভিন্ন সময় সালিশ বৈঠকও হয়েছে। এ নিয়ে ইসমাইল ও করিম গাজীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানায়, শিশুটির শুধু গলাই কাটা হয়নি। তার হাতের রগও কেটে দেয়া হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জুয়েল গাজীর বন্ধু খোরশেদ আলমকে বিকালে আটক করা হয়েছে। তিনি গ্রামের হানিফ আকনের ছেলে।
মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মাসুমুর রহমান বিশ্বাস জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে শাহজাহান গাজীর প্রতিপক্ষ এ ঘটনা ঘটাতে পারে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ময়নাতদন্ত হয়নি। পুলিশ জানায়, কাল (আজ) সকালে ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এর আগে বিকালে এডিশনাল এসপি মাহফুজুর রহমান ঘটনাস্থল ঘুরে গেছেন।