মানবজমিন বরগুনা প্রতিনিধির ওপর ছাত্রলীগের হামলা

ক্রাইমর্বাতা রিপোট:  সংবাদ প্রকাশের জেরে মানবজমিন-এর বরগুনা প্রতিনিধি মো. মিজানুর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা।  ‘খুনের আসামিকে নিয়ে সাংসদের ইফতার’ শিরোনামে ২০১৭ সালে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জেরে বরগুনা ডিসি অফিসের স্পিডবোট চালক জব্বার খান হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ৮ নম্বর আসামি বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি হেমায়েত হোসেন মোল্লা (৩০) এ হামলা চালায়।

রোববার দুপুর ১টার দিকে বরগুনার বামনা উপজেলা শহরের সদর রোডে তার ওপর এ হামলা চালানো হয়। হামলায় গুরুতর আহত সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে তাৎক্ষণিক বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক অবস্থার অবনতি দেখে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করে। এ ঘটনায় বামনা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গুরুতর আহত সাংবাদিক মিজানুর রহমান জানায়, ২০১৪ সালের ৮ই অক্টোবর সন্ধ্যায় বরগুনা ডিসি অফিসের স্পিডবোট চালক মো. জব্বার খানকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনার সংবাদ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচার হয়। পরে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে।

তাদের তদন্তে আরো ১২ আসামির নাম আসে। পুলিশ ওই ১২ আসামির নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করে। এদের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগ সহসভাপতি হেমায়েত হোসেন মোল্লা ৮ নম্বর আসামি ছিল। চার্জশিটে নাম ওঠার পরে সকল আসামি গা ঢাকা দেয়।

১০ই জুন ২০১৭ সালে হেমায়েত হোসেন মোল্লা স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে বামনা আসমাতুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের ইফতার পার্টিতে ঢাকা থেকে বামনা ও পাথরঘাটায় আসে।  ঘটনায় পরের দিন দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় ‘খুনের আসামিকে নিয়ে সাংসদের ইফতার’ শিরোনামে সংবাদ ছাপা হয়।

ওই সংবাদ প্রকাশের জেরে তাকে সহ অনেক সাংবাদিককে দেখিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় হেমায়েত।

সাংবাদিক মিজানুর রহমান আরো জানায়, ঘটনার দিন দুপুর ১টার দিকে তাকে ফোন করে হেমায়েত মোল্লার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাকে আসতে বলে।

তিনি সেখানে গেলে আচমকা তার উপর হামলা চালিয়ে  কিল-ঘুষি মারে। একপর্যায়ে তাকে বাজারের সড়কে ফেলে রোলার দিয়ে এলোপাথাড়ি পেটায়। পার্শ্ববর্তী অপর এক ব্যবসায়ী মো. শাহিন আকন তাকে বাঁধা দিলে তিনিও এসময় আহত হন। এ ঘটনায় বামনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ওবায়দুল কবির আকন্দ দুলাল জানায়, এভাবে চলতে থাকলে সাংবাদিকরা কখনো সত্য সংবাদ প্রকাশ করতে পারবে না। এ ঘটনায় আইনশৃংখলা বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বামনা সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে হত্যা মামলার আসামি হেমায়েত হোসেন মোল্লার মোবাইল ফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

বামনা থানার ওসি জিএম শাহ-নেওয়াজ বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।