ক্রাইমর্বাতা রিপোট: লাশ উদ্ধারের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার শিশু হালিমা (৩) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। নিহত শিশু হালিমার মা খাদিজা বেগম কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চাচা হেলাল মিয়া শিশুটিকে খুন করেছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় হালিমার চাচা হেলাল মিয়া (২৬) ও তার আরেক সহযোগী রুবেল মিয়াকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। হেলাল ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর উপজেলার ভাদুঘর গ্রামের মুন্সিহাঁটির ফরিদ মিয়ার ছেলে এবং রুবেল একই গ্রামের ভূইয়াপাড়ার আরফুজ মিয়ার ছেলে। ইতোমধ্যে হেলাল ও রুবেলকে আসামি করে হালিমার মা খাদিজা বেগম সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছেন। সেই মামলায় আটক হেলাল ও রুবেলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে হেলাল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বাকীর করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানাননো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, হালিমা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি খুবই হৃদয়বিদারক। তার লাশ উদ্ধারের পরপরই আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করি। তদন্তের প্রধান বিষয় ছিল হালিমার মায়ের সঙ্গে কারো সম্পর্ক আছে কি না। সেটি তদন্ত করতে গিয়েই আমরা জানতে পারি হালিমার মাকে তার চাচা হেলাল মিয়া মাস খানেক আগে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ নিয়ে দুই পরিবারের ঝগড়াও হয়েছে। এরপর থেকেই প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে ওঠে হেলাল। তখন থেকেই সে হালিমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত কয়েকদিন আগে হালিমাকে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। কিন্তু পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।
হেলাল পুলিশকে জানিয়েছে, হালিমাকে হত্যার বিকল্প পরিকল্পনা হিসেবে সে তার সহযোগী রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে ৪-৫ দিন আগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরির্দশন করে। ঘটনার দিন হালিমাকে কোলে করে হেলাল বাড়ির বাইরে নিয়ে যায়। পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে হালিমাকে এক প্যাকেট চিপ্স কিনে দিয়ে বাড়ি থেকে ৫০০ গজ দূরে একটি বহুতল ভবনের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে হেলাল। আর এ হত্যাকাণ্ডের সময় রুবেল পাহারা দিয়েছিল।
এ ঘটনায় রোববার রাতে রুবেলকেও তার বাড়ি থেকে আটক করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য যে, শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ভাদুঘর গ্রামের ভূইয়াপাড়ার একটি বহুতল ভবনের পাশ থেকে হালিমার লাশ উদ্ধার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। হালিমা ওই গ্রামের মুন্সিহাঁটির রাজমিস্ত্রি আমির হোসেনের মেয়ে। এদিন সকালে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় হালিমা।
সংবাদ সম্মেলনে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রেজাউল কবির, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদ, জেলা বিশেষ শাখার ডিআইও-১ ইমতিয়াজ আহম্মেদ ও সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রমুখ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।