এদিকে, নিহত আঁখির স্বামী অরুপ বোস, তার শ্বশুর এস.কে বোস (সন্তোষ কুমার বোস) ও শাশুড়ি অশোকা বোসকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসানুজ্জামান জানান, আঁখির লাশ ঝুলন্ত থাকলেও তার দু’টি পা মেঝেতে পাতানো অবস্থায় ছিল। নিহতের নাক থেকে দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত পানি বের হচ্ছিল বলে জানান তিনি। তার দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা এখনই বলা কঠিন।
লাশটি ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত আঁখির স্বামী অরুপ বোস, তার শ্বশুর এস.কে বোস ও শাশুড়ি অশোকা বোসকে আটক করা হয়েছে।
এস.আই আরো জানান, তিন বছর আগে যশোর জেলার কেশবপুরের গড়ভাঙ্গা গ্রামের গোবিন্দ বসুর মেয়ে আঁখির সাথে বিয়ে হয়েছিল সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর গ্রামের জ্যোতির্বিদ এস.কে বোসের ছেলে অরুপের।
এলাকাবাসী জানায়, আঁখির মত এত ভালো কোন গৃহবধূ এই এলাকায় নেই। তাকে প্রায়ই অত্যাচার ও নির্যাতন করত স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি মিলে। আজ (১২ ফেব্রুয়ারী) সকালে আঁখিকে স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি মিলে পিটিয়ে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ঘরের সিলিং ফ্যানে টানিয়ে দেয়। তাদের পরিবার এটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
অরুপ আগেও যশোর বেজপাড়ার একটি মেয়েকে জোরপূর্বক বিয়ে করেছিল। তাকেও প্রায় নির্যাতন করা হতো। আগের বউটি তার শ্বশুরের লাম্পট্যের কারনে ঘর-সংসার করতে পারেনি বলে এলাকার লোকজন জানায়।
নিহতের মা জোছনা বসু ও তার স্বজনরা জানান, আঁখির শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ও তার স্বামী প্রায়ই তাকে মারপিট ও নির্যাতন করতো। তারা আরো জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে আঁখিকে জোর পূর্বক গালে বিষ ঢেলে হত্যার পর লাশ ফ্যানে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো জানান, লাশ ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।