ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃ নাটকীয় বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। জিম্মি সঙ্কটের অবসানের দুঘন্টা পর গতরাতেই চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহবুবার রহমান বলেছেন, ছিনতাইকারীর কাছে যে অস্ত্রটি পাওয়া গেছে এটা ফেইক, খেলনা পিস্তল। একই কথা বলেছেন, বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীও। গতরাতে এক টেলিভিশনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পিস্তলটি ছিল খেলনা। অন্যদিকে বিমান থেকে নেমে আসা যাত্রীরা গুলির কথা বললেও কমান্ডো অভিযান নিয়ে কথা বলার সময় চট্টগ্রামের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান তা নাকচ করেছেন। তিনি বলেছেন, হয়তো ট্রমার কারনে যাত্রীদের এমন মনে হতে পারে।
তিনঘন্টার রুদ্ধশ্বাস মুহূর্ত। কমান্ডো অভিযান।
বিমান ছিনতাইয়ের নাটক। ধৃত যুবক অভিযানে নিহত। সবছাপিয়ে এখন বড় প্রশ্ন খেলনা পিস্তলধারীকে মেরে ফেলার আদৌ কোনো প্রয়োজন ছিল কি না?
বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে এছাড়াও বেশকিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র। বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যুহ এড়িয়ে কি করে এই যুবক প্রবেশ করলো। যেখানে মাথা থেকে পায়ের জুতো পর্যন্ত পরীক্ষা করা হয়। আর ধৃত যুবক নিহত হওয়ায় যে প্রশ্নটি আড়ালেই থেকে গেল, কে এই মাহাদী? কেন তিনি বিমান ছিনতাইয়ের নাটক মঞ্চস্থ করতে চেয়েছিলেন? যুবক কি মানসিক বিকারগ্রস্থ ছিলেন? বিমান ছিনতাইয়ের নাটক কি তার প্রেমিকাকে ফিরে পেতে? নাকি এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল। আর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই বা কি কথা বলতে চেয়েছিলেন? প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যায়, যুবকটি তার স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছিলেন? টেলিভিশন ও অনলাইন মাধ্যমে বিশেষায়িত এই অভিযানে যুবককে আটকের কথা বলা হলেও এর কিছু সময় পরে নিহত হওয়ার কথা জানা যায়।
অভিযানের পরপরই এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান বলেছিলেন, ওই যুবকের কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, শুরুতে আমরা ছিনতাইকারীকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। পরে সে আক্রমণাত্মক থাকায় স্বাভাবিক নিয়মে অভিযান চালানো হয়। এতে সে শুরুতে আহত হয়। পরে নিহত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বিমানের মধ্যে তার সাথে আমাদের অ্যাকশন হয়েছে, পরে সে বাইরে নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে বেবিচক চেয়ারম্যান এম নাঈম হাসান বলেছিলেন, “সো ফার আমি জানি, তার কাছে একটা অস্ত্র ছিল। বলেছে গায়ে বোম্ব জড়ানো আছে বা তার জড়ানো আছে। ওটা কী ছিল, সেটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। ওই যুবকের আচরণ অসংলগ্ন ছিল বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত শুরুও হয়েছে। অপেক্ষা কি বেরিয়ে আসে তদন্তে। যে প্রশ্নগুলো জনমনে ঘুরপাক তার কতোটা উত্তর মিলে সেটিই দেখার বিষয়।
উল্লেখ্য, ১৩৪ জন যাত্রী ও ১৪ জন ক্রু নিয়ে বিজি ১৪৭ ফ্লাইটটি গতকাল ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাচ্ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরই বিমানটি ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে। পরে কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে ছিনতাই নাটকের অবসান হয়।