উপযুক্ত জবাব দেবে পাকিস্তান : হুঁশিয়ারি কুরেশির

ক্রাইমবার্তা  রিপোটঃ  পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেছেন, পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস ভারতের না দেখানোই উচিত। মঙ্গলবারের রাতে পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ভারতীয় যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশের কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিকদের কুরেশি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, তাদের এ পদক্ষেপের জবাব দেয়ার অধিকার পাকিস্তানের আছে। পাকিস্তান এর জবাব দেবে।

রাতের এ ঘটনায় জরুরি বৈঠকের ডাক দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেখানে সেনাপ্রধানসহ প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।

এর আগে নিজের মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন কুরেশি। তারপরই সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এ সময় কুরেশি বলেন, ভারত যা করেছে, তা পরিষ্কারভাবে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণরেখার লঙ্ঘন। এক্ষেত্রে আত্মরক্ষার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে। এই ঘটনার জবাব দেয়ার সব রকমের অধিকার রয়েছে পাকিস্তানের। পাকিস্তান সেই জবাব দেবে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বৈঠকের পর জাতীয় জরুরি নিরাপত্তা বৈঠকে বসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ইসলামাদের পরবর্তী করণীয় কী হবে মূলত তা-ই এ বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয়।

এদিকে এ হামলার ব্যাপারে সরকারিভাবে বিবৃতি দিয়েছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে এক লিখিত বিবৃতিতে জানান, ভারতের এ হামলায় জয়েশ-ই-মোহাম্মদের সব থেকে বড় প্রশিক্ষণ শিবির ধ্বংস করা হয়েছে। এতে সম্ভবত মারা গিয়েছে জয়েশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের শ্যালক মাওলানা ইউসুফ আজহারও।

সংবাদমাধ্যমকে দেয়া ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘১৪ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানভিত্তিক জয়েশ-ই-মোহাম্মদ একটি আত্মঘাতী হামলা চালায় পুলওয়ামায়। যে ঘটনায় চল্লিশ জনেরও বেশি আধা-সেনা সদস্য নিহত হন। পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে জয়েশ-ই-মোহাম্মদের সদর দফতর রয়েছে।

গত দু’ দশক ধরে পাকিস্তানে সক্রিয় তারা। ভারতের পক্ষ থেকে বার বার প্রমাণ দেয়া হলেও পাকিস্তান এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বিশ্বস্ত সূত্রে ভারত জানতে পারে যে, আরো আত্মঘাতী হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে জয়েশ-ই-মোহাম্মদ। এই অবস্থায় ভারতের পক্ষ থেকে স্বতঃপ্রণোদিত আক্রমণ জরুরি ছিল।

সেই প্রেক্ষিতে এ দিন বালাকোটে জইশের বৃহত্তম প্রশিক্ষণ শিবির ধ্বংস করেছে ভারত। এ হামলায় জইশের সিনিয়র কমান্ডার, প্রশিক্ষকরা ছাড়াও প্রশিক্ষণাধীন প্রচুর সদস্য নিহত হয়েছে। মাসুদ আজহারের শ্যালক মৌলানা ইউসুফ আজহার ওরফে ওস্তাদ ঘাউরি এই প্রশিক্ষণ শিবিরের প্রধান ছিলেন। একটি পাহাড়ের ওপরে জঙ্গলের মধ্যে এই প্রশিক্ষণ শিবিরটি ছিল।

এ অভিযানের নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল জয়েশের ওই প্রশিক্ষণ শিবির। কোনো সাধারণ মানুষের যাতে ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করেই এ হামলা চালানো হয়েছে। ভারত সরকার সন্ত্রাস মোকাবিলায় অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা আশা করি, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সদর্থক পদক্ষেপ নেবে।’’

পাকিস্তান অবশ্য ভারতের এই হামলার কথা স্বীকার করলেও তাতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছে।

Check Also

হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩৫ ইসরাইলি সেনা নিহত, আহত শতাধিক

গাজার উত্তরে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে দীর্ঘদিন ধরে অভিযান চালাচ্ছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। সম্প্রতি সেখানে হামাস …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।