ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী নেতাদের বাড়িতে তল্লাশী চালিয়েছে। স্বাধীনতাকামীদের আন্দোলনের পেছনে আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি খুঁজে বের করতে এ অভিযান চালায়।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটায় তারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে গিয়ে অভিযান চালায়। এতে পাকিস্তানে জয়েশ-ই মোহাম্মদের ঘাঁটিসহ বেশ কিছু স্থানে হামলা চালিয়ে বেশ ক্ষতিসাধন করে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ভারতের এ অভিযানে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ২০০-৩০০ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, এতে কোনো ক্ষতিক্ষতি হয়নি।
এ ঘটনার পরপরই এনআইএ কর্মকর্তারা শ্রীনগরে মিরওয়াইজ ফারুক, ইয়াসিন মালিক, সাবির সাহ, আশরাফ সেহারি, জাফর ভাট এবং সইদ আলি গিলানির ছেলে নইম গিলানির বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযান চালানোর আগে স্থানীয় পুলিশ ও সিআরপিএফের সদস্যরা ওইসব এলাকা ঘিরে ফেলে।
এনআইএ জানায়, হাওয়ালা চ্যানেলের মাধ্যমে ঠিক কী পরিমাণ অর্থ পাকিস্তান থেকে কাশ্মীরে প্রবেশ করছে, এবং সেই সব কাজে কারা সাহায্য করছে তা বের করতেই মূলত এ অভিযান চালানো হচ্ছে।
ইয়াসিন মালিককে গত শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়। আর সাবির শাহ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে দিল্লির তিহার জেলে আটক আছেন
পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার এক সপ্তাহ পর ভারত সরকার কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী নেতাদের নিরাপত্তা উঠিয়ে নেয়। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই বাড়ি তল্লাশির এ ঘটনা ঘটে। সপ্তাহের শেষ দিকে ভারত সরকার কাশ্মিরে আধা-সামরিক বাহিনীর ১০০টি কোম্পানি সেখানে মোতায়েন করে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতি বোমা হামলায় ভারতের আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪৯ জন সদস্য নিহত হয়। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করে জয়েশ-ই মোহাম্মদ। ভারত প্রথমে নাম উল্লেখ না করেই প্রতিবেশী দেশকে দোষারোপ করে।
কিন্তু পরবর্তীতে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করেই তাদেরকে এ হামলার জন্য দায়ী করে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভারতের সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় সব স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এর জবাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, যদি এ ব্যাপারে কোনো প্রমাণ থাকে তাহলে আমাদের কাছে দিন, আমরা এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। আর যদি ভারত এ প্রস্তাব না মেনে হামলা চালায়, তাহলে পাকিস্তানও এর সমুচিত জবাব দেবে।
এদিকে ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করলেও অনেকে এ ব্যাপারে ভারতের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাকেই দায়ী করেছেন। যেমন- আগে থেকে হামলার তথ্য থাকা সত্ত্বেও উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নেয়া, এক সাথে এতগুলো সেনাকে এক কনভয়ে পাঠানো, নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করেই সড়কপথে তাদেরকে কর্মস্থলে পাঠানো- ইত্যাদি কারণে দেশের ভেতরেই ভারত প্রশাসনের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।