ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চারজন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ ও বিজিবির দাবি, নিহতরা মাদককারবারি। এ সময় পুলিশ-বিজিবির পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে লক্ষাধিক ইয়াবা, চারটি অস্ত্র, তাজা কার্তুজ ও খালি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার ভোরে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের পুরনো মগপাড়ার কাঁকড়া প্রজেক্ট এলাকায় এবং বৃহস্পতিবার রাতে হ্নীলা নয়াপাড়া এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, তারা হলেন- উপজেলার চৌধুরীপাড়ার আবদুল জলিলের ছেলে নজির আহমদ (৩০), হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াপাড়ার হাজী মোহাম্মদ জাকারিয়ার ছেলে গিয়াস উদ্দিন (২৯) এবং সদর ইউনিয়নের খোনকারপাড়া এলাকার কালা মিয়ার ছেলে আবদুস শুক্কুর (৪৩)।
জানা যায়, শুক্রবার ভোররাত ৩টার দিকে টেকনাফ থানা পুলিশের হাতে আটক হন নজির আহমদ ডাকাত ও গিয়াস উদ্দিন। তাদের নিয়ে পুলিশের বিশেষ দল বটতলীসংলগ্ন নাফ নদের স্লুইচগেট এলাকায় অভিযানে গেলে তাদের অনুসারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলিবর্ষণ করলে নজির ও গিয়াস গুলিবিদ্ধ হন।
তাদের গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে নেয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ সময় টেকনাফ থানা পুলিশের এসআই সুজিত চন্দ্র দে, এএসআই খায়রুল, কনস্টেবল এরশাদুল ও হেলাল উদ্দিন আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে ছয় হাজার ইয়াবা, তিনটি দেশীয় তৈরি অস্ত্র, ৯ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ১৩ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করা হয়।
টেকনাফ থানার পরিদর্শক তদন্ত এবিএমএস দোহা জানান, নিহত দুজনের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে নজিরের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, পুলিশ অ্যাসল্ট ও মাদকসহ পাঁচটি এবং গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাদকের দুটি মামলা রয়েছে।
এদিকে বিজিবি দুই ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল আছাদুদ জামান চৌধুরী জানান, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টেকনাফ-২ বিজিবির একটি টহল দল সাবরাং মগপাড়া কাকঁড়া প্রজেক্ট এলাকায় নিয়মিত টহলে যায়।
এ সময় ইয়াবা পাচারকারীরা টহল দলের ওপর অতর্কিতভাবে গুলিবর্ষণ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে।
বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলিবর্ষণ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় ৮-১০ মিনিট গুলিবিনিময় হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ দুজনকে ঘটনাস্থলে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়।
পুলিশ দুজনকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থল তল্লাশি করে এক লাখ পিস ইয়াবা, একটি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও একটি খালি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে আহত বিজিবি সদস্যকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পৃথক মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান বিজিবির ওই কর্মকর্তা।