খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে মঙ্গলবার বিএনপির বৈঠক

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ    দলের চেয়ারপারসন কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করবে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠকে থাকবেন। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।

এদিকে জেল কোড অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান তার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার আদেশও দেন।

এর আগে রোববার (৩ মার্চ) খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ জজ-৯ এর আদালতে তাকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসার দেওয়ার আদেশ দিতে আবেদন জানান।

গত তারিখে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার শুনানিতে বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি গ্যাটকো মামলায় হাজিরা দিতে এসে তিনি পড়ে যেতে যাচ্ছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তা না ধরলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারতো। শুনানিতে দীর্ঘ সময় বসে থাকার মতো শারীরিক অবস্থাও তার নেই। তার চিকিৎসার প্রয়োজন। শুনানিতে মাসুদ আহমেদ আদালতকে জানান, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে উচ্চ আদালতের একটি আদেশ রয়েছে।

এরপর বিচারক জানিয়েছিলেন, উচ্চ আদালতের আদেশ ছাড়া আর কী করতে পারে নিম্ম আদালত- সেই সম্পর্কে বলেন। এ বিষয়ে বিচারক দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজলের মতামত জানতে চান। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিতে পারেন আদালত।

নাইকো দুর্নীতি মামলার প্রধান আসামিরা হলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন এবং জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন।

এই মামলায় তিনজন আসামি পলাতক। এরা হলেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

গত বছরের ৫ মে এই মামলায় অভিযুক্ত আরেক আসামি সাবেক সচিব শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতে খালেদা জিয়াসহ মামলার ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন জানান।

কানাডার কোম্পানি নাইকোর সাথে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। পরের বছর ৫ মে ওই মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান। অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

খালেদা জিয়া নাইকো, গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাতিলের আবেদন জানান। আলাদা এসব রিট আবেদনের পরে দুর্নীতি মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট বিভাগ।

কয়েক বছর পর মামলাগুলো সচলের উদ্যোগ নিয়ে রুল নিষ্পত্তির আবেদন জানায় দুদক। গত বছর আলাদা আলাদা শুনানি শেষে মামলা তিনটি সচলের রায় দেন আদালত।

Check Also

বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন

দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।