খুলনা র্যাব-৬ এর সাতক্ষীরার দায়িত্বে থাকা সহকারি পুলিশ সুপার বজলুর রহমান জানান, গোপন খবরের ভিত্তিতে বুধবার দুপুর একটার দিকে তার নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা ঝাউডাঙ্গা বাজারের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ি আশরাফুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালান।
এ সময় আশরাফুল বাড়িতে না থাকলেও তার স্ত্রী কমপক্ষে চারটি মাদক মামলার আসামী জেসমিন নাহারকে আটক করেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ি ঘরের মধ্যে রাখা একটি কৌটার মধ্য থেকে ৭০০ গ্রাম গাজা উদ্ধার করা হয়।
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আশরাফুল ও তার স্ত্রী প্রতিনিয়তই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমাতসীন দলের নেতাদের সঙ্গে সভা ও সমাবেশ করে থাকেন। এ কারণে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
ঝাউডাঙ্গা বাজার ব্যবসায়ীর নেতা আবু সিদ্দিক, জাহিদ হোসেন, সহিদুল ইসলামসহ অনেকে জানান, আশরাফুল ও তার স্ত্রী জেসমিন নাহার এক সময়কার বিএনপি নেতা বলে পরিচিতি ছিল ঝাউডাঙ্গা এলাকায়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম সংসদীয় নির্বাচনে কৌশলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি এর সঙ্গে ছবি তুলে বিভিন্ন পোস্টার তৈরি করে এলাকায় ছড়িয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ বনে যান।
একপর্যায়ে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সাতক্ষীরা ট্রাক ও ট্রাঙ্ক লরী শ্রমিক ইউনিয়নের এক নেতা জাকির হোসেন ওরফে কাদুর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে ঝাউডাঙ্গা ট্রাক ও ট্রাঙ্ক লরী শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বনে যান। শ্রমিক নেতার প্রবাব খাটিয়ে আশরাফুল ইসলাম ২০১৫ সালের মে মাসে ঝাউডাঙ্গা সরকারি খাদ্যগুদামের জায়গা দখল করে জোরপূর্বক বাড়ি বানান।
বাজার কমিটির পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করলে উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে এসে সত্যতা খুঁজে পান। একপর্যায়ে উ জেলা সহকারি ভূমি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ওই ঘর ভেঙে দিয়ে সেখানে জেলা প্রশাসকের জায়গা বলে সাইন বোর্ড তুলে দেন।
এরপরও আশরাফুল দম্পতি ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কতিপয় নেতাদের ম্যানেজ করে আবারো ঘর নির্মাণ করে সেখানে বহাল তবিয়তে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আশরাফুলের বিরুদ্ধে সদর থানাসহ বিভিন্ন এলাকায় কমপক্ষে একডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে বলে জানান তারা।
খুলনা র্যাব-৬ এর লেঃ কমাণ্ডার জাহিদ হোসেন বুধবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে জানান, জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মাদক আইনে মামলা দিয়ে সদর থানার মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।