আসাদুজ্জামান: সাতক্ষীরায় এনসিটিবি’র অনুমোদনহীন পিক-আপ ভর্তি নোট-গাইড জব্দ করে কোন ধরণের ব্যবস্থা না নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে প্রশাসনকে চতুর ব্যবসায়ীরা ‘হাইকোর্ট’ দেখিয়ে জব্দকৃত নিষিদ্ধ নোট-গাইড ছাড়িয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগে করেছেন সচেতন শিক্ষাবিদরা।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গত বৃৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শহরের নাজমুল সরণীর বইমেলা ও পপি লাইব্রেরী থেকে পিক-আপ ভর্তি বিপুল পরিমাণ নোট-গাইড জব্দ করেন সাতক্ষীরা সদর থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) আবুল কালাম। বইগুলোর মুল্য আনুমানিক প্রায় তিন লাখ টাকা। বইগুলোর মধ্যে ছিল অনুপম, গ্যালাক্সি ও পাঞ্জেরীসহ বিভিন্ন প্রকাশনীর তৃতীয় থেকে নবম শ্রেণীর সহায়ক গাইড। বইগুলো ছাড়িয়ে নিতে বইমেলা লাইব্রেরীর প্রোপাইটার জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্যা ও পপি লাইব্রেরীর মিলন আহমেদ শুক্রবার দুপুরে সদর থানায় সদলবলে যান। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে সিদ্ধান্তহীনতা।
দুপুরে সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই করে দেখবেন, বইগুলো বৈধ কিনা। অবৈধ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে জব্দকৃত বইসহ লাইব্রেরীর মালিকদের বিরুদ্ধে কোনরুপ আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে শুক্রবার রাতেই বইগুলো ফেরত দেয়া হয়। অথচ সরকার নোট-গাইড বন্ধে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক আইন-২০১৮ প্রণয়ন করেছেন।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রশাসনিক সহযোগিতা না পাওয়ায় মোবাইল কোর্ট করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া সরকার প্রণীত আইনের বিরুদ্ধে প্রকাশকরা হাইকোর্টে করা রিটের অনুলিপি প্রদর্শণের ফলে জব্দকৃত বই গুলো ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, অবৈধ নোট গাইড জব্দে পুলিশের ভূমিকা প্রশসংনীয়। জব্দকৃত বই ও মালিকদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতে শাস্তি নিশ্চিত করলে ভাল হতো। তবে হাইকোর্টের দাখিলকৃত রিটের অনুলিপি প্রদর্শণের কারনে হয়তো জব্দকৃত বইগুলো ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
জেলা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব হাফিজুর রহমান মাসুম জানান, জব্দকৃত বইগুলো ছেড়ে দেয়ার অর্থই হচ্ছে অবৈধ নোট ও গাইডের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন। যেটি দুঃখজনক। তাছাড়া অবৈধ এসব নোট-গাইড ও ব্যাকরণ বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে কিনা, তা যাচাই করা একান্ত প্রয়োজন।