ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাতক্ষীরার তালা উপজেলা নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছেন ৭৩ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি। তাদের নিয়োগে সহায়তা করেছেন তালার নির্বাচন অফিসার ও সমবায় অফিস পরিদর্শক। তারাও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক জানিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীক পাওয়া প্রার্থী ঘোষ সনৎ কুমারের সাথে যোগসাজশ করে প্রিজাইডিং অফিসারদের এই তালিকা করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীকের এমএম ফজলুল হক। তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও খেসরার ইউপির দুই বারের চেয়ারম্যান ফজলুল হক বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য।
ফজলুল হক তার লিখিত বক্তব্যে বলেন তিনি দীর্ঘ ৫০ বছর যাবত রাজনীতি করে আসছেন। মুক্তিযুদ্ধের একজন সৈনিক হিসাবে তিনি তালা উপজেলাকে দুর্নীতিমুক্ত করার লক্ষ্যে আগামি ২৪ মার্চ অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তিনি জানান এ উপজেলার ৯৩ টি কেন্দ্রের ৭৩ টিতে যাদের প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে তাদের ৭৩ জনই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। বাকি ২০ জন ঘোষ সনৎ কুমার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মী। এ ছাড়া সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রেও পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার অপূর্ব কুমার বিশ^াস ও সমবায় পরিদর্শক অজয় কুমার ঘোষের মাধ্যমে প্রার্থী ঘোষ সনৎ কুমারের সাথে যোগসাজশ করে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন তালা সদরের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজ ও মহিলা কলেজ থেকে কোনো শিক্ষক প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ না পেলেও ঘোষ সনৎ কুমারের নিজস্ব লোক শালিকা কলেজ অধ্যক্ষ বিধান চন্দ্র সাধুসহ একই কলেজের ৯ জন শিক্ষককে ভোট গ্রহনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভোটে কারচুপি করার লক্ষ্যে এই কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে বলে দাবি করেন এমএম ফজলুল হক। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন যেখানে ৮০ শতাংশ মুসলিম কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের বাদ দেওয়া হলো কেনো। ফজলুল হক ভোটগ্রহন কর্মকর্তাদের তালিকা যাচাই বাছাই করে নতুন করে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনের এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজেদা আফরীন বলেন প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ তালিকা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বচ্ছতার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। এর সাথে চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমারের কোনো সম্পর্ক নেই। কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের বাদ রেখে উপজেলার সকল সরকারি কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া যাদের দক্ষতা আছে তারা অগ্রাধিকার পেয়েছেন। ভোটগ্রহন কর্মকর্তা নিয়োগে কোনো ধরনের অস্বচ্ছতার প্রশ্নই ওঠে না উল্লেখ করে তিনি বলেন এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করলে তার তদন্ত হতেই পারে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি সংস্থা রুপালি পরিচালক শফিকুল ইসলাম, সাবেক এলজিইডি কর্মকর্তা আবদুল আজিজ , কাজল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম ও মাছ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম।
Check Also
বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন
দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …