সাতক্ষীরায় প্রতারক চক্রের আবির্ভাব: আইডি কার্ড সংগ্রহ করেই দিচ্ছে প্রতারণা মামলা

ভয়ঙ্কর প্রতারক চক্রের আবির্ভাব: আইডি কার্ড সংগ্রহ করেই দিচ্ছে প্রতারণা মামলা

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাতক্ষীরায় ভয়ঙ্কর প্রতারক চক্রের আবির্ভাব ঘটেছে। তারা কৌশলে সাধারণ মানুষের আইডি কার্ড সংগ্রহ করে টাকা দাবি করছে। টাকা দিতে না পারলে দালালদের সহযোগিতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় প্রতারণা মামলা করে হয়রানি করছে। এভাবে একের পর এক হয়রানির স্বীকার হচ্ছে দিনমুজুর থেকে শুরু করে দিন আনা খেটে খাওয়া মানুষ।
প্রতারণার শিকার পুরাতন সাতক্ষীরা দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত গোলাম এজদানের ছেলে মো. ওলিউল্লাহ জানান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ জোড়দিয়া গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে বহু বিবাহের হোতা কামরুল ইসলাম ওরফে বকুলের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে সে আমাকে সাংবাদিকতরা কার্ড করে দেবে বলে আমার কাছ থেকে ৫২ হাজার ৫০০ শত টাকা ও ভোটার আইডি কার্ড ও এক কপি ছপি নেয়। আমি যখন সাংবাদিকতার কার্ড প্রতারক কামরুলের কাছে চাই তখন সে টালবাহানা করতে থাকে। আমি তার প্রতারণা বুঝতে পেরে আমার পাওনা টাকা দাবি করি। সে টাকা দিতে অস্বীকার করে এবং আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এরপর সে আমার ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে শ্যামনগর থানার শংকরকাটি গ্রামের জনৈক মিঠুর কাছে দেয়। মিঠু সেটি শ্যামনগরের ঘোলা গ্রামের প্রতারক চক্রের হোতা বেলায়েতের ছেলে রাজ্জাকের কাছে দেয়। রাজ্জাক সেটি শ্যামনগরের ঘোলা গ্রামের আরেক প্রতারক আফজালের কাছে দেয়। আফজাল সেটি নিয়ে বরিশাল কাউনিয়া থানায় আমার নামে ২০ হাজার টাকার প্রতারণুা মামলা করে। মামলটি বর্তমানে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন আছে। মামলা নং সিআর ৬৪/২০১৮। মামলায় আসামি করা হয় ১৩২ জনকে। এই প্রতারণা মামলার প্রায় ১০০ জনের বাড়ি সাতক্ষীরায়। মামলায় অধিকাংশ আসামি দিনমুজুর। অপরদিকে, অনুরূপভাবে বরিশালের বানারিপাড়া থানায় আমার নামে আরও একটি মামলা করে। মামলার বাদি শ্যামনগরের জয়নগর গ্রামের সৈয়দ আলি সরদারের ছেলে আজিজুল সরদার। আজিজুল সরদার বলেন, আমি আফজাল ও রাজ্জাকের কথা মত মামলাটি করি টাকার বিনিময়ে।
ওলিউল্লাহ আরও জানান, হঠাৎ করে পুলিশ আমার বাড়িতে যেয়ে ওরেন্টের কপি নিয়ে হাজির হয়ে আমাকে গ্রেফতার করে। এ মামলায় আমি তিনি দিন জেল হাজতে থাকি। জেল থেকে বের হয়ে আমি বঝুতে পারি আমি প্রতারণা শিকার।
মামলার বাদী আফজাল হোসেন জানান, আমি রাজ্জাকের তথ্য দেওয়া মতে মামলা করেছি। প্রত্যেকটা আসামির নাম মামলায় বসাতে আমাকে দুই হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। তবে সাতক্ষীরা থেকে যে নামগুলো আসে সেগুলো প্রতারক কামরুল ওরফে বকুল ঠিক করে দেয়।
ওলিউল্লাহ আরও জানান, এই প্রতারক চক্র এলাকার সাধারণ মানুষের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে ও স্ট্যাম্প আগে থেকে উঠিয়ে নিয়ে মামলা করে থাকে।
এই প্রতারক চক্রের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করে করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
এ ব্যাপারে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিল হোসেন জানান, প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Check Also

গাড়িচাপায় বুয়েট শিক্ষার্থী মাসুদের মৃত্যু ‘হত্যাকাণ্ড’

প্রাইভেটকার চাপায় বুয়েট শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদের মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ বর্ণনা করে দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ৬ দফা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।