ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ দশ বছরের শিশু নাঈম ইসলাম। ব্র্যাক আনন্দ স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। বাবা-মা আর ছোট বোনের সঙ্গে কড়াইল বস্তিতে থাকে।
বাবা ডাব বিক্রি করে সংসার চালান। মা কর্মজীবী। রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে এ শিশুর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ছবিতে দেখা যায়, আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত ফায়ার সার্ভিসের একটি পাইপের ফাটা অংশ পলিথিন দিয়ে দু’হাতে চেপে ধরে আছে সে। নাঈম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের এভাবে সাহায্য করে মানবতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা সত্যিই অনন্য।
এখন সে সবার কাছে খুদে ‘হিরো’। তার কাজে মুগ্ধ হয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি তাকে পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার দিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে কড়াইল বস্তি থেকে নাঈম হাঁটতে হাঁটতে চলে আসে বনানী এফআর টাওয়ারের সামনে। সেখানে গণমাধ্যমের কর্মীদের সে জানায়, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা টিভিতে দেখেই দৌড়ে এফআর টাওয়ারের সামনের সড়কে সে আসে।
সেখানে ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপে ছিদ্র দেখে দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে সে। তার সঙ্গে ছিল আরও কয়েকজন শিশু। কিন্তু তারা টাকার বিনিময়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সাহায্য করে।
কিন্তু সে টাকা নেয়নি। কারণ তার মতে, বিপদে পড়া মানুষদের সাহায্য করে টাকা নিতে নেই। নাঈম বলে, ‘বিপদে পড়া মানুষদের বাঁচানোর জন্যই আমি এ কাজ করেছি।
এর বিনিময়ে টাকা নেয়া ঠিক না।’ এ সময় নাঈম তার স্বপ্নের কথা জানায়। সে বলে, ‘বড় হয়ে আমি পুলিশ অফিসার হব। এ জন্য পড়ালেখা করব। যত কষ্টই হোক পড়ালেখা বাদ দেব না।’
নাঈমের জন্য পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার: শিশু নাঈমের এই মানবিক কাজে খুশি হয়ে তাকে উপহারস্বরূপ পাঁচ হাজার ডলার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ওমর ফারুক সামি। পাশাপাশি তার যাবতীয় পড়ালেখার দায়িত্ব গ্রহণেরও কথা জানিয়েছেন তিনি।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ওমর ফারুক সামি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি নাঈমের কাজে খুবই খুশি হয়েছি। নাঈম খুব কষ্ট করে লেখাপড়া করছে, সে পুলিশ অফিসার হতে চায়। তার ইচ্ছেপূরণ করতে আজ থেকে তার পড়ালেখার দায়িত্ব নিলাম।
পর্যায়ক্রমে তার উপহারের পাঁচ হাজার ডলারও প্রদান করব। এ বিষয়ে নাঈমের পরিবারের সঙ্গে আলাপ হয়েছে।’