ক্ষমতায় আসলে ভারতে কোন বাংলাদেশি থাকবে না : বিজেপি

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, ‘এবার ক্ষমতায় আসলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে খুঁজে খুঁজে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের দেশছাড়া করা হবে। এজন্য আসামের মতো এ রাজ্যেও চালু করা হবে ‘জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন’ (এনআরসি)।’ তবে হিন্দু ও বৌদ্ধদের সুরক্ষা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার এ রাজ্যে বিজেপি প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন অমিত। শুরুতেই দলের সেই পুরনো হিন্দুত্ববাদকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন তিনি।

এনডিটিভি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, অমিত শাহের এ হুঙ্কারের আগে প্রথমবারের মতো পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের অন্যতম শরিক দল শিবসেনা। বৃহস্পতিবার তারা জানায়, প্রদশটিতে ১৫টি লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তারা।

১১ এপ্রিল ভারতে লোকসভা নির্বাচন। ভোটার প্রায় ৯০ কোটি। তাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ও হুঙ্কার দিয়ে যাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি। এরই ধারাবাহিকতায় এদিন দলীয় প্রার্থী জন বার্লার সমর্থনে আলিপুরদুয়ারে প্রচারে নামেন অমিত। শুরুতেই পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘মোদি সরকার ফের ক্ষমতায় এলেই আমরা বাংলায় এনআরসি আনব।

আসামের মতো প্রত্যেক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে খুঁজে বের করে বিতাড়িত করা হবে।’ এ সময় এনআরসি বাস্তবায়ন হলে রাজ্যের সব শরণার্থীর অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত হবে বলে দাবি করেন অমিত। এরপর তিনি বলেন, ‘এনআরসি জনগণের প্রতি আমাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ। হিন্দু ও বৌদ্ধ শরণার্থীদের কোনো ভয় নেই। তাদের দেশছাড়ার দরকার হবে না। তারা যাতে এখানে মর্যাদার সঙ্গে থাকতে পারে আমরা তা নিশ্চিত করব।’

মমতার উদ্দেশে অমিত বলেন, তিনি বাংলার সংস্কৃতি ধ্বংস করে দিচ্ছেন। তার দাবি, মাদ্রাসাকে ৪ হাজার কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। কিন্তু ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারদের কোনো গুরুত্ব নেই তার কাছে। তিনি আরও দাবি করেন, রাজ্যের সব মসজিদের ইমামকে মাসে মাসে ভাতা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু মন্দিরের পুরোহিতদের দেয়া হচ্ছে না।

সম্প্রতি এনআরসি তালিকা থেকে আসামের প্রায় ৪০ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছে। নাগরিক তালিকা থেকে ঠিক কী কারণে নাম বাদ পড়ল- জানার অপেক্ষায় রয়েছেন আসামের ওই ৪০ লাখ বাসিন্দা।

এর আগে আসাম রাজ্য কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ‘ওই ৪০ লাখ বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী।’ যারা নিজেদের ভারতের নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করতে পারবে না, তারা নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন এবং রাষ্ট্রহীন হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

কেউ কেউ মনে করছেন, এ ধরনের কার্যক্রম নির্বাচনে ভোটের ব্যবধান বাড়ানোর চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। বিজেপি এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে।

Check Also

তাবলীগ জামায়াতের সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ-সমাবেশ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : তাবলীগ জামাতে সাদপন্থীদের বর্বোরিচত হামলার প্রতিবাদ ও সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সহসভাপতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।