ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক গাড়ি চালকের জামাতাকে মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে শাখা ছাত্রলীগের তিনকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আজ ভোর ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকা থেকে তাদের আটক করে ভূক্তভোগীর স্বজন ও পরিবহন চালকেরা। এ সময় আরো দুই ছিনতাইকারী ছাত্রলীগকর্মী পালিয়ে যায় বলে জানান তারা। পরে আটককৃত তিনজনকে বিশ^বিদ্যালয় প্রক্টর অফিসে হস্তান্তর করা হয়।
ছিনতাই ও মারধরের শিকার মনির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক মো. নুরুল আলমের গাড়ি চালক আলমগীর হোসেনের জামাতা।
আটককৃতরা হলেন, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৪তম আবর্তনের সঞ্জয় ঘোষ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫ তম আবর্তনের মো. আল রাজি সরকার ও ভূতাত্তি¦ক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের রায়হান পাটোয়ারী। এরা সবাই শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানার অনুসারী বলে জানা গেছে। রায়হান পাটোয়ারীকে ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছরের অক্টোবরে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সে অবৈধভাবে এখনো হলে থাকছে।
পালিয়ে যাওয়া দুজন হলেন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫ তম আবর্তনের শাহ মোস্তাক সৈকত ও দর্শন বিভাগের ৪৫ তম আবর্তনের মোকাররম শিবলু।
আহত মনির হোসেন বলেন, ভোরে তিনি তার কর্মস্থল ঢাকা যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে অভিযুক্তরা তাকে বিশমাইল থেকে ধরে বোটানিক্যাল গার্ডেনে ইজিবাইকে করে নিয়ে যায়। পরে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে ১ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলবে নতুবা ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে ধরিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। মনির হোসেন তার পরিবারকে ফোনে আটকের কথা জানায়। পরে ইজিবাইক চালকের সুত্র ধরে পরিবারের সদস্যরা বোটানিক্যাল গার্ডেনে এলে তাদেরকে ও মারধর করে অভিযুক্তরা।
অভিযুক্তরা বলেন, ‘এই লোকটাকে দেখে আমাদের সন্দেহ হয়েছিল তাই আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি কিন্তু সে তর্ক করে। পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাকে আমরা মারধর করি। ’
আহত মনির হোসেনকে বিশ^বিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে সাভার এনাম মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান জানান, ‘প্রক্টরিয়াল বডি রিপোর্ট তৈরি করছে। আজকে অথবা আগামীকাল শৃঙ্খলা কমিটির সভা ডাকব। বিশ^বিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়মে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে।’ পালিয়ে যাওয়া দুইজনের বিরুদ্ধেও রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এদিকে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনের আরেকটি সূত্র বলছে এই ধরনের ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন সবসময় জিরো টলারেন্স। শিগিগিরই জরুরি সিন্ডিকেট ডেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা হতে পারে।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানাকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।