ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার ওসির কর্মকাণ্ডে থানায় কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন হাইকোর্ট। এক বিচারক বলেছেন, ওসিরা এত সাহস কোথায় পায়?
মামলা না নেয়ায় শ্যামনগরের ওসি হাবিল হোসেনের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তির রিট আবেদনের শুনানিতে মঙ্গলবার বিচারপতি নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ থেকে এ মন্তব্য আসে।
জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একদল দুর্বৃত্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার সোরা গ্রামের ফজলুল করিমকে মারধর করে এবং বেশকিছু মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানালে তিনি বিষয়টি গুরুত্বই দেননি। ফজলুল করিম এ বিষয়ে মামলা করতে চাইলে মামলাও নেননি। ওসি বরং চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করার পরামর্শ দেন। এ কারণে মামলা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন ফজলুল করিম।
রিটের শুনানির শুরুতেই আদালত জানতে চাইলে ঘটনাটি আংশিক সত্য বলে উল্লেখ করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।
এ সময় আদালত বলেন, ‘ওসি মামলা নিলেন না কেন? আমরা রুল দিয়ে দেখি, কেন তিনি মামলা নিলেন না। ওসি সাহেবরা সব জায়গায় কোর্ট বসিয়ে দেন। তারা কি সালিশ করতে বসেছেন যে সুবিধামতো হলে মামলা নেবেন। অথচ টাকা ছাড়া থানায় একটা জিডিও হয় না। ওসিরা যেখানে-সেখানে কোর্ট বসায়, রাতে কোর্ট বসায়। এত সাহস তারা কোথায় পায়?’
আদালত আরও বলেন, ‘১৩ হাজার পুলিশ যারা থানায় বসেন, তাদের জন্য গোটা পুলিশের বদনাম হতে পারে না। অনেক পুলিশ খুব কষ্ট করে জীবন-যাপন করেন। অথচ অনেকের দেখি ৪-৫টা করে বাড়ি। দেশটা কি চোরের?’
আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শামসুল হক কাঞ্চন।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম যুগান্তরকে বলেন, আদালত শুনানিতে থানা পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ স্বর্ণালংকার লুট, হামলা, দরজা ভাঙার কোনো প্রমাণ পায়নি। কিন্তু পাঁচিল ভাঙার প্রমাণ পেয়েছে। কোর্টকে এটা জানানোর পর কোর্ট বলল, যেহেতু পাঁচিল ভাঙা পেয়েছে আংশিক সত্যতা তো পাওয়া গেছে। তাহলে পুলিশ কেন মামলা নেবে না?’
মামলাটি এক সপ্তাহের জন্য ‘স্ট্যান্ডওভার’ রেখে আদালত শ্যামনগর পুলিশকে এর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।