ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: ‘ মাদারীপুর: মাদারীপুরের শিবচরে ভাগ্নেকে অপহরণ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছেন তারই আপন খালা মাকসুদা বেগম।
অপহরণের ৬ ঘণ্টা পর খালা মাকুসদা বেগমের সহযোগিতায় রাখা গোপন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র নিরবকে (৭)। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
অপহৃত নিরব মুন্সীগঞ্জের লৌহজং কামাল শেখের ছেলে। সে শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের চরচান্দ্রা গ্রামের নানা বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। নিরবের বাবা দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব থাকেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ৪৩নং চরচান্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র নিরব। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিরবকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে খালা মাকসুদা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শিরিনা খাতুনের কাছ থেকে ছুটি নেয়। পরে মাকসুদা ভাগ্নে নিরবকে নিয়ে বিদ্যালয় থেকে চলে যায়।
স্কুল ছুটি হওয়ার পর নিরব বাড়িতে না যাওয়ায় পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। দুপুর ২টায় একটি নম্বর থেকে কল করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
এ ঘটনার পর বিকালে নিরবের মা বাদী হয়ে শিবচর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিবচর পৌরসভাধীন বাহেরচরে মাকসুদা বেগমের দূর-সম্পর্কের আত্মীয় শেফালীর বাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে। রাতেই শিশুটির খালা মাকসুদাকে পুলিশ আটক করে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে অপহরণ নাটকের মূল ঘটনা।
অপহৃত নিরব জানায়, আমার ছোট খালা মাকসুদা আমাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে স্কুল থেকে শিবচর নিয়ে আসে। পরে শিবচর পৌরসভার একটি বাসায় আমাকে রেখে খালা চলে যায়।
মাকসুদার সহযোগী শেফালী জানায়, নিরবের খালা মাকসুদা বেগম মঙ্গলবার দুপুরে নিরবকে ২ ঘণ্টার কথা বলে আমার কাছে রেখে যায়। আমি বুঝতে পারিনি যে, এই শিশুটিকে অপহরণ করে আমার কাছে রেখে গেছে।
অপহরণকারী মাকসুদা বেগম বলেন, আমি এই অপহরণের বিষয় কিছুই জানি না। আমি আর আমার বোন (নিরবের মা) দুজনই ব্যাংকে আসছিলাম টাকা উত্তোলন করতে। আমি আমার ভাগ্নেকে অপহরণ করিনি।
চরচান্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, আনুমানিক বেলা ১১টায় ইংরেজী তৃতীয় ক্লাস চলছিল। ক্লাস চলাকালীন নিরবের খালা মাকসুদা এসে নিরবকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে ছুটি নিয়ে বিদ্যালয় থেকে চলে যায়। পরে দুপুরে আমরা জানতে পারি নিরবকে পাওয়া যাচ্ছে না।
শিবচর থানার ওসি জাকির হোসেন মোল্লা জানান, থানায় সাধারণ ডায়েরি হওয়ার পর পুলিশ বিকালেই অভিযান শুরু করে। সন্ধ্যায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিবচর পৌরসভাধীন বাহেরচর এলাকার শেফালীর বাসা থেকে অপহৃত শিশু নিরবকে আমরা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। শিশুটিকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তার খালা মাকসুদাকে আমরা রাতেই আটক করে থানায় নিয়ে আসি।
তিনি জানান, ধারণা করা হচ্ছে শিশুটির মা ও খালা প্রবাসী স্বামীর পাঠানো ১০ লাখ টাকা লোপাট করার পাঁয়তারায় এ অপহরণ নাটকটি করেছে।