ক্রাইমর্বাতা রির্পোট: দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার বিচার। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহানকে হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে।
এর আগে এই মাদরাসা শিক্ষার্থীর পরিবার থেকে এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করা হয়েছিলো।
এদিকে ঢাকায় বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানগুলো থেকে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহানকে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। প্রতিবাদ অব্যাহত আছে ফেনীর সোনাগাজীতেও। সে সব প্রতিবাদ থেকেও দ্রুত বিচার চাওয়া হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার নুসরাত জাহানের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন যে তারা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হত্যাকাণ্ডের বিচার চান। তদন্তে যেন গাফিলতি না হয়, সেটাও তাদের পরিবারের দাবি।
“আমার বোনকে যারা হত্যা করেছে, এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু এবং ন্যায় বিচার চাচ্ছি। আর এই মামলা যেনো দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে নেয়া হয়।এটা কোনো গাফিলতি যাতে না হয়, সেটাই আমরা পরিবার চাচ্ছি।”
মামলায় ১২ জন অভিযুক্তের মধ্যে এপর্যন্ত মাদরাসাটির অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে অন্যতম দুজন অভিযুক্ত রোববার ফেনীতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন।
পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে মাদরাসা ছাত্রীকে হত্যার ঘটনা সম্পর্কে তারা গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পেয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দেয়া সম্ভব হবে বলে কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, অভিযোগপত্র বা চার্জশিট পাওয়ার সাথে সাথেই মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়া হবে।
“যে মুহূর্তে এটার অভিযোগপত্র দেয়া হবে, তখনই আমি এই মামলাটিকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করে এর ত্বরিত বিচারের ব্যবস্থা নেবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। জনগণেরও দাবি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিয়ে এই অপরাধের বিচার করে শাস্তি নিশ্চিত করা। আমরা সেটাই করব।”
আইন অনুযায়ী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে।
এই সময়ের মধ্যে বিচার কাজ শেষ করা সম্ভব না হলে বাড়তি ৩০ দিন সময় নেয়া যায়।
মোট এই ১২০ দিনের মধ্যেও কোনো কারণে বিচার শেষ না হলে এরপর আর মাত্র পনের দিন সময় নেয়া যাবে।
আইনজীবীরা বলছেন, যে আইনে বিচার হবে, তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রয়েছে।
এদিকে, ঢাকায় বর্ষবরণের অন্যতম প্রধান প্রধান অনুষ্ঠান থেকেও এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানানো হয়।
নগরীর রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনে এই অনুষ্ঠান থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহানকে হত্যা এবং সাম্প্রতিক সময়ে সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডসহ নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
বিভিন্ন সংগঠন ঢাকায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের বাইরেও মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ফেনীর সোনাগাজী যেখানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহানের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেই সোনাগাজিতেও প্রতিবাদ হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি