ক্রাইমর্বাতা রির্পোট: সাতক্ষীরা সদর উপজেলাধীন খানপুর ছিদ্দীকিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার এমএমসি কমিটির সদস্যর বিরুদ্ধে মাদ্রাসার ২০ বছরের কয়েক লক্ষ হারীর টাকা আত্মসাৎ, এমএমসি কমিটির সভাপতির অগোচরে মাদ্রাসার জমির পজিশন বিক্রয় করে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন কাজে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
এঘটনায় বিভিন্ন দপ্তরে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, এমএমসি কমিটির সদস্যে সহ স্থানীয় জনগণ।
সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে গেলে স্থানীয়রা জানান, মাদ্রাসাটি অত্যন্ত পুরাতন প্রতিষ্ঠান। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মাদ্রাসার উন্নতিকল্পে বিভিন্ন দাতা অনেক বিঘা জমি দান করেছিলেন। তবে এমএমসি কমিটির সদস্য মর্ডাণ ভ্যারাইটিজের প্রোপাইটার মিজানুর রহমান, বিদ্যুৎসাহী শাহাদাৎ ট্রের্ডাসের প্রোপ্রাইটার শাহাদাৎ হোসেন ও মাসুদ ক্লিনিকের প্রোপ্রাইটার ডাঃ আলহাজ্ব সমির উদ্দীন চুক্তিবদ্ধ ডিডের টাকা না দিয়ে ক্ষমতা বলে দীর্ঘ ২০বছরেরও বেশি সময়ের ডিডকৃত জমির কয়েকলক্ষ হারির টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ তাদের।
এসময় তারা জানান, প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তার দেখভাল করতো খানপুর গ্রামের পীরসাহেব হাসান হুজুর। তবে তিনি মারা যাওয়ার পর থেকে মাদ্রাসা ফান্ডের লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করে এমএমসি কমিটির কিছু সদস্যরা। পরবর্তীতে মহরুম পীর সাহেবের ছেলে মহসেন আল মাঞ্জুর সভাপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির দায়িক্ত গ্রহণ করলে তাকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তারা।
এ নিয়ে উভয়পক্ষর মধ্যেকার বিরোধ চলায় মাদ্রাসা ফান্ডের লক্ষাধিক আয়ের টাকা আত্মসাৎ করে তারা। সম্প্রতি মাদ্রাসার কাছ থেকে বিনা ডিডে জোরপূর্বক ভোগকৃত শাহাদাৎ ট্রেডার্সের দোকান ঘরটির পজিশন সবার অগোচরে দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে স্থানীয় আজগর আলী নামে এক সাইকেল মিস্ত্রীর কাছে বিক্রয় করে দেয় শাহাদাৎ হোসেন।
বিষয়টি পরবর্তীতে জানাজানি হয়ে গেলে এমএমসি কমিটির সভাপতি, এলাকাবাসীসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য ইব্রাহীম খলিলের সাথে বিরোধ বাধেঁ তার। বিরোধসূত্রে দূর্নীতিগ্রস্ত ঐসকল এমএমসি সদস্যদের যোগসাজশে সম্প্রতি একই জমির পজিশন দুইবার বিক্রয় করে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ করে তারা।
এসময় তারা আরো জানান, খানপুর গ্রামের মৃত দীন আলী গাজীর ছেলে বাবলু রহমান ও তার সহোদর ভাই ছামসুর রহমান দোকানঘর নির্মাণের জন্যে একই জমির পজিশন কেনার জন্যে আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও এমএমসি কমিটির সদস্যরা জমির পজিশনটি ছামছুর রহমানকে না দিয়ে বাবলু রহমানকে দেয়।
তবে এমএমসি কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ও বিদ্যুৎসাহী শাহাদাৎ হোসেন বাবলু রহমানের ডিডকৃত জমির অল্পকিছু অংশ লীজসূত্রে সামছুর রহমানকে ভাড়া করে দেয়। তবে সম্প্রতি দূর্নীতিগ্রস্থ ঐসকল এমএমসি কমিটির সদস্যদের হস্তক্ষেপে বাবলু রহমানের ডিডকৃত জমি রাতারাতি দখল করে ছামছুর রহমানকে দিয়ে দেয়। এতে গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ছামছুর রহমানের দখলকৃত দোকানঘরটি রবিবার রাতে ভেঙ্গে দেয়।
এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি মহসেন আল মাঞ্জুরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি তিনি হলেও এসমস্ত ব্যাপারে তাকে জানানো হয়নি। তবে বিষয়টি জানার সাথে সাথে তিনি হিসাব চাইলে সেগুলো দেখাতে ব্যর্থ হয় তারা। একারনে এবিষয়ে তিনি মৌখিক ভাবে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন বলে জানান। তবে প্রতিষ্ঠানটির ডিড দেওয়া সকল জমির হারির টাকার হিসাব না পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান।
এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল আলহাজ্ব আহাদ হোসেন বলেন, ডিড দেওয়া জমিগুলোর যারা হারীর টাকা দেয়নি তারা অতি শ্রিঘই হারীর টাকা সহ ডিডের জমি ফেরত দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।তবে তাদের দূর্নীতি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মর্ডাণ ভ্যারাইটিজের প্রোপ্রাইটার মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোন দূর্নীতি বা মাদ্রাসার টাকা আত্মসাৎ এর সাথে জড়িত না। এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা ভালো বলতে পারবেন তারা নাকি আমরা দূর্নীতিগ্রস্ত!
এসময় তিনি আরো বলেন, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠালগ্নে মাদ্রাসার উন্নয়নে বিভিন্ন দাতারা জমি দান করেছিলেন। মাদ্রাসার এড়িয়ার বাইরে অবস্থিত দাতাদের জমিগুলো দানসূত্রে তারা ভোগদখল করতো। পরবর্তীতে দাতাদের কাছ থেকে মাদ্রাসার দাবিকৃত জমিটা ক্রয়করে সে। তার ক্রয়করা জমি মাদ্রাসা নিজেদের জমি দাবিকরে টিএনও অফিসে একটি অভিযোগও করেন। ঐসময় সেখান থেকে একটা মিমাংসা করে দেয় বলে জানান তিনি। মিমাংসা টা কী? সে সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।