ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ ঢাকা মহানগর মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ‘শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা বিশ্বজুড়ে ঝিমিয়ে পড়া উগ্রবাদীদের সজাগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে তারা বাংলাদেশে কিছু করতে পারবে না। কারন বাংলাদেশে এখন আর সুসংগঠিতভাবে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটানোর সক্ষমতা তাদের নেই।’ তবুও আইনশৃংখলা বাহিনী এব্যপারে যথেষ্ট সজাগ রয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘মিট উইথ মনিরুল ইসলাম’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন ।
মনিরুল ইসলাম বলেন, শ্রীলঙ্কায় যেটি ঘটেছে সেটি সন্ত্রাসবাদ এ বিষয়ে কোণ সন্দেহ নাই। তবে শ্রীলঙ্কায় কালচার অব ভায়োলেন্স রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে গৃহযুদ্ধ চলেছে। মুসলমানরা সেখানে খ্রিষ্টানদের থেকেও সংখ্যা গরিষ্ঠ। মুসলিম এবং খ্রিষ্টানদের মধ্যে কোণ সংঘাত ছিল না। আবার এলটিটি কখনো কোন ধর্মীয় গ্রুপকে টার্গেট করে হামলা চালায়নি। তারা গভর্নমেন্ট ম্যাকানিজমের সঙ্গে জারা জড়িত তাদের ওপর হামলা করেছে। কোন সিভিলিয়নদের ওপর হামলা করেনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আইএসএর কোন খলিফা নাই। এটা ইরাক সিরিয়াতে থাকতে পারে। বাংলাদেশ থেকে যারা আইএসএ গিয়েছে তাদের অধিকাংশ ২০১৪ সালের মধ্যে গিয়েছে। এদের পাসপোর্ট এর মেয়াদ ইতমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। সিরিয়া থেকে তাদের বাংলাদেশে ফেরত আসতে গেলে এয়ারক্রাফট আসতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশি আইডেনটিটি লাগবে। পার্শ্ববর্তী দেশের কোণ দূতাবাস থেকে ট্রাভেলপাশ সংগ্রহ করতে হবে। যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ উগ্রপন্থা ও সহিংসতাকে সমর্থন করে না। এক্ষেত্রে মিডিয়ারও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে যেন উগ্রবাদ নিয়ে সংবাদ এমন ভাবে প্রকাশ না করা যাতে তাদের প্রতি মানুষের সহানুভূতি বাড়তে পারে। ‘সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ ভাবে কাজ করতে হবে। যেমন জিহাদ, শহীদ, মুজাহিদ এই শব্দ গুলো ব্যবহার আপনারা না করেন। কারণ এটার একটা ধর্মীয় ইতিবাচক অর্থ রয়েছে। সন্ত্রাসবাদীরা আসলে খুনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়ে যদি আমরা সতর্ক দৃষ্টি না রাখি এবং তাদের অবস্থান দীর্ঘ মেয়াদি হয় তাহলে তারা ভবিষ্যতে উগ্রবাদে জড়িয়ে যেতে পারে। কারণ এখন যারা আছে তারা বেশির ভাগই শিশু ও নারী। এই শিশুরা যখন অ্যাডাল্ট হবে তখন তাদেও প্রতি হওয়ায় অত্যচার নিপীড়ন থেকে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়ে উগ্রবাদে জড়িয়ে পরতে পারে। তবে এই মুহূর্তে তেমন কোণ আশঙ্কা নেই।’
অনুষ্ঠানের আরও উপস্থিত ছিলেন ক্রাবের নবনির্বাচিত সভাপতি আবুল খায়ের, ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান, ক্র্যাব সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ারসহ সংগঠনের সিনিয়র সদস্যরা।