ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ শ্রীলংকায় গত রোববার একের পর এক চালানো বোমা হামলায় যে ৩১০ জন নিহত হয়েছে, তা স্থানীয় একটি গোষ্ঠী সন্ত্রাসীদের আন্তর্জাতিক এক নেটওয়ার্কের সহায়তায় ঘটিয়েছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন।
গির্জা ও হোটেলে একযোগে চালানো হামলায় আরও অন্তত ৫০০ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতিও রয়েছে। এ ছাড়া শেখ সেলিমের জামাতাও হামলায় আহত হয়েছেন।
ভয়াবহ এ হামলার জন্য স্থানীয়ভাবে অচেনা ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত নামে একটি জিহাদি গ্রুপ দায়ী বলে মনে করছে শ্রীলংকার সরকার। ফলে তদন্তকারীরা এখন ওই গ্রুপটির প্রতি বিশেষভাবে নজর দিচ্ছেন।
যদিও কোনো গোষ্ঠী এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি। শ্রীলংকার কর্মকর্তারা বলছেন, এরা স্বল্প পরিচিত নতুন একটি গোষ্ঠী, যাদের সম্পর্কে কিছুদিন আগেও তেমন একটা জানা ছিল না।
কিছুদিন আগে একটি বুদ্ধ ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনার সঙ্গে ওই গ্রুপটি জড়িত ছিল বলে ধারণা করা হয়।
বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগে ২০১৬ সালে গোষ্ঠীটির একজন নেতাকে গ্রেফতারের পর প্রথম এটি আলোচনায় আসে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত গ্রুপটি ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী ধ্যানধারণা লালন করে।
শ্রীলংকার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, এ গ্রুপটি কাট্টাকুডি নামে একটি মুসলিম অধ্যুষিত শহরে ২০১৪ সালে গঠিত হয়। তবে এর আগে কোনো মারাত্মক কোনো হামলার সঙ্গে এদের নাম শোনা যায়নি।
তবে দলটি তথাকথিত ইসলামিক স্টেট গ্রুপকে সমর্থন করত বলে জানা যাচ্ছে।
অ্যালান কিনান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের শ্রীলংকাবিষয়ক পরিচালক। তিনি ধারণা দিচ্ছেন যে, ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত সম্ভবত সেই গোষ্ঠী, যারা গত বছরের ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনায় জড়িত ছিল।
তবে ১০ দিন আগে ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াত চার্চে হামলা করতে পারে বলে বন্ধুপ্রতিম একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থা শ্রীলংকার পুলিশকে সতর্ক করেছিল বলে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম খবর দিচ্ছে।
ফলে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের মনোযোগ এখন ন্যাশনাল তাওহিদ জামায়াতের দিকেই বেশি পড়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজমের পরিচালক অ্যানি স্পেকহার্ড বলছেন, ওই গ্রুপটির উদ্দেশ্য কোনো বিপ্লব করা নয়, তাদের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে- বিশ্বের অন্য দেশের জিহাহিদের আন্দোলনকে শ্রীলংকায় ছড়িয়ে দেয়া এবং সমাজে ঘৃণা, ভয় ও বিভেদ তৈরি করা।