সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসে দুদকের অভি যান

 

তালা ঝুলিয়ে পালালো আলোচিত ফজলু

ক্রাইমবার্তা রির্পোটঃসাতক্ষীরিঃ

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল চত্বরে ঢুকতেই ভান্ডারে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেলেন স্টোর কিপার ফজলুল হক। তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। এর আগে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে গ্রেপ্তার হন আলোচিত ফজলুল। তিনি চাকুরিতে বরখাস্ত হলেও কিভাবে পুনরায় চাকুরি ফিরে পেলেন তা খতিয়ে দেখা হবে। কিভাবে যন্ত্রপাতি বুঝে নেয়ার আগে হিসাব বিভাগ থেকে বিল পরিশোধ হলো তাও দেখা হবে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল ইসলাম।

জানা গেছে, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জন্য তিনটি পৃথক টেন্ডারে বরাদ্দকৃত ১৮ কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম না কিনে সেই টাকা লোপাট করা হয়েছে- এমন অভিযোগের তদন্ত করতে বুধবার দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে সহকারী পরিচালক শাওন মিয়াসহ দুদকের চার কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। তারা হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছাতেই স্টোর কিপার ফজলুল হক ভা-ারে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান। ফজলুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে আগেও দু’টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।
এ প্রসঙ্গে দুদক’র সহকারী পরিচালক শাওন মিয়া জানান, তিনি বিষয়টি সিভিল সার্জনকে জানিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। তিনি জানান, স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে বরাদ্দকৃত ১৮ কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম লুণ্ঠন সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বহুল আলোচিত সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের স্টোরকিপার এ কে এম ফজলুল হককে ২০১৬ সালের ২০ জুন গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয় এলাকা থেকে ফজলুল হককে গ্রেফতার করে করা হয়। দুদক সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা রিজার্ভ স্টোরের সরকারি ওষুধ আত্মসাতের সহায়তায় তৎকালীন সিভিল সার্জন ও স্টোর কিপার এ কে এম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধানে দুদক কর্মকর্তারা ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ওষুধ ঢাকা থেকে গ্রহণ করে তা চুয়াডাঙ্গা রিজার্ভ স্টোরে মজুদ না করে বিক্রি করে দেন। এই অভিযোগে দন্ডবিধির ৪০৮/১০৯ এবং ১৯৭৪ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর মামলা করা হয়। দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক শহীদুল ইসলাম মোড়ল বাদী হয়ে মামলাটি করেন। অন্যদিকে, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস থেকে সাত কোটির ও বেশি টাকার চিকিৎসা সামগ্রী আত্মসাৎ করার অভিযোগে সদর হাসপাতালের স্টোর কিপারকে গ্রেপ্তার করে দুদক। ২০১৭ সালের ২১ মে সকাল ১০টার দিকে সিলিভ সার্জন অফিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার স্টোর কিপার কেএম ফজলুল হক শ্যামনগর উপজেলার ইছাকুর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে। বর্তমানে শহরের মধুমল্লারডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা। তার একটি বিলাশবহুল বাড়ি আছে।

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।