ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ দেবহাটা :: দেবহাটার পারুলিয়া আহছানিয়া মাদ্রাসার স্বঘোষিত দুর্নীতিবাজ সভাপতি শরিফুল ইসলাম বুলু ও তার ভাই আজহারুলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা পরিবারের সদস্যদের ফিল্মি স্টাইলে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।
শনিবার দুপুর ১টার দিকে মাদ্রাসা চলাকালীন সময়ে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা পরিবারের আজীবন সদস্য ফজিলা খাতুন, হুমায়ুন কবির রাজু, ইব্রাহিম সরদার মিলন ও জাহাঙ্গীর আলম বাচ্চুকে ফিল্মি স্টাইলে
অফিসের চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে জখম করে দুর্নীতিবাজ স্বঘোষিত সভাপতি শরিফুল ইসলাম বুলু, তার ভাই বহুল আলোচিত আজহারুল ইসলাম সহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা। মারপিটে আহত মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা পরিবারের সদস্যরা জানায়, মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে যাবতীয় জমি এবং অর্থ তাদের পরিবারের দেয়া।
দানকৃত জমির মধ্য থেকে উন্নয়নের জন্য থাকা আলাদা জমিটি হারী দিয়ে হারীর সমুদয় অর্থ মাদ্রাসার উন্নয়ন খাতে সুনিদ্দিষ্ট হিসাবের মাধ্যমে খরচের নিয়ম থাকলেও, ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত জমির হারী থেকে প্রাপ্ত প্রায় ১০ লক্ষ টাকার কোন হিসাব না দিয়ে মাদ্রাসার সুপার আমিনুর রহমান, স্বঘোষিত দুর্নীতিবাজ সভাপতি শরিফুল ইসলাম বুলু ও তার ভাই আজহারুল ইসলাম আত্মসাত করে চলেছে।
শুধু তাই নয়, ২০১০ সাল পরবর্তী এ পর্যন্ত মাদ্রাসায় হওয়া শিক্ষক ও দাপ্তরিক সহ ৫টি পদের নিয়োগে এসব দুর্নীতিবাজরা হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা।
সভাপতির ভাই আজহারুল খাতা কলমে অনেক আগে অবসরে গেলেও অদ্যবধি প্রতিদিনই অবৈধভাবে শিক্ষকতার নামে রামরাজত্ব কায়েম করে চলেছে মাদ্রাসাটিতে।
তাছাড়া মাদ্রাসায় রিয়াজুল ইসলাম নামের এক নৈশ প্রহরী নিয়োগ দেয়া থাকলেও, ওই নৈশ প্রহরীর নামে বেতন তুলে আত্মসাত করছে আজহারুল ইসলাম ও তার ভাই সভাপতি শরিফুল ইসলাম বুলু।
মাদ্রাসায় সর্বশেষ নিয়োগপ্রাপ্ত এনামুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসায় নিয়োগ পেতে প্রথমে মাদ্রাসার সুপার আমিনুর, সভাপতি শরিফুল ইসলাম বুলু ও তার ভাই আজহারুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা এবং পরবর্তীতে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের আরো ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।
এসব দুর্নীতির ঘটনায় গত ৮ এপ্রিল দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেনের কাছে মাদ্রাসার সভাপতি শরিফুল ইসলাম বুলু ও তার ভাই আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা আজীবন সদস্য ফজিলা খাতুন, জাহাঙ্গীর আলম বাচ্চু ও ইব্রাহিম সরদার মিলন।
শনিবার মাদ্রাসা চলাকালীন সময়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা পরিবারের আজীবন সদস্য হিসেবে ফজিলা খাতুন, হুমায়ুন কবির রাজু, ইব্রাহিম সরদার মিলন ও জাহাঙ্গীর আলম বাচ্চু চলমান দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ
করায় মাদ্রাসার সুপার আমিনুরের মদদে দুর্নীতিবাজ সভাপতি শরিফুল ইসলাম বুলু ও তার ভাই আজহারুল ইসলাম সহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা অতর্কিত হামলা ও মারপিট শুরু করে।
এসময় এসব দুর্নীতিবাজ ও তাদের সহযোগীরা ফিল্মি স্টাইলে অফিসের চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে জখম করে মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা পরিবারের সদস্যদের।
আহতদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম বাচ্চুকে প্রথমে সখিপুরস্থ দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এসব দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাত ও মারপিটের ঘটনায় দুর্নীতিবাজ সভাপতি শরিফুল ইসলাম বুলুর কাছে জানতে চাইলে অনেকটা দাম্ভিকতার সাথে সে জানায়, সাংবাদিকদের তথ্য নেয়ার কোন অধিকার নেই। ক্ষমতা থাকলে আমার বিরুদ্ধে পত্রিকায় লেখেন।
তাতে আমার কিছু যায় আসে না। পরবর্তীতে অপর অভিযুক্ত মাদ্রাসার দুর্নীতিবাজ সুপার আমিনুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আয়-ব্যায় ও রেজুলেশনের যাবতীয় খাতাপত্র সভাপতির বাড়ীতে। সভাপতি না বললে আমি কোন তথ্য দিতে পারবো না।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জড়িতদের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিলো বলে আহতদের পরিবার সুত্রে জানা গেছে।