শপথ না নেয়ায় মির্জা ফখরুলের আসন শূন্য ঘোষণা

ক্রাইমর্বাতা রির্পোট   ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্ধারিত সময়ে শপথ না নেওয়ায় বগুড়া-৬ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিষয়টি সংসদকে অবহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে ৯০ দিনের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শপথ নেওয়ার কথা। কিন্তু তিনি অসমর্থ (শপথ না নেওয়ায়) হওয়ায় তাঁর আসনটি শূন্য হয়েছে।

গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মির্জা ফখরুল ঠাকুরগাও ও বগুড়া থেকে নির্বাচন করেন। বগুড়া-৬ আসনে তিনি নির্বাচিত হন।

বিএনপি এই নির্বাচনে ৬টি আসনে জয়ী হয়। ইতিমধ্যে ৫ জন সাংসদ দলীয় সিদ্ধান্তে শপথ নিয়েছেন। মির্জা ফখরুল বলেছেন, দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন।

সংবিধান অনুযায়ী কোনো সংসদ সদস্যে নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে নব্বই দিনের মধ্যে শপথ নিতে না পারলে ওই সাংসদের আসন শূন্য হবে। তবে এই ৯০ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে স্পিকার যথার্থ কারণে তা বাড়াতে পারবেন। মির্জা ফখরুল এই সময়ে শপথ নেননি, সময় চেয়ে কোনো আবেদন করেননি।

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বগুড়া-৬ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয়ী হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই নির্বাচনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির মোট ছয়জন প্রার্থী জয়ী হন। এদের মধ্যে চারজন সোমবার শপথ নেন।

সংসদের বাইরেই রয়ে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শপথ নেয়ার জন্য সময় বাড়াতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে কোনো আবেদনও করেননি তিনি।

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলম নিজেই বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করে বলেছেন, দলীয় সিদ্ধান্তেই তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেননি। একইসঙ্গে শপথ নেয়ার জন্য সময় চেয়ে স্পিকারের কাছে কোনো আবেদনও করেননি বলে জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে আমি নাকি সময় চেয়ে আবেদন করেছি। আসলে আমি কোনো চিঠি দেইনি। সময়ও চাইনি। এটাও আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। এটা আমাদের কৌশল। আর এই কৌশলের অংশ হিসেবে বিএনপির সদস্যরা শপথ নিয়েছে। আমি নেইনি’।

সংবিধানের ৬৭ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোন সংসদ-সদস্যের আসন শূন্য হইবে, যদি (ক) তাহার নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে ৯০ দিনের মধ্যে তিনি তৃতীয় তফসিলে নির্ধারিত শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করিতে ও শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিতে অসমর্থ হন: তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পূর্বে স্পিকার যথার্থ কারণে তাহা বর্ধিত করিতে পারিবেন’।

এর আগে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গণফোরামের দুই সংসদ সদস্যের মধ্যে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ গত ৭ মার্চ শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দেন। তাকে অনুসরণ করে গণফোরামের প্রতিক উদীয়মান সূর্য নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত দলটির আরেক নেতা মোকাব্বির খান গত ২ এপ্রিল শপথ নেন। এছাড়া গত ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার শপথ নেন ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির মো. জাহিদুর রহমান।

শপথ গ্রহণের সময়সীমার শেষ দিনে এসে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বিএনপির বাকি চারজনও সোমবার সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। শপথ নেয়া এই চারজন হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উকিল আব্দুস সাত্তার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুনুর রশীদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম এবং বগুড়া-৪ আসনের মোশাররফ হোসেন।

Check Also

তাবলীগ জামায়াতের সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ-সমাবেশ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : তাবলীগ জামাতে সাদপন্থীদের বর্বোরিচত হামলার প্রতিবাদ ও সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সহসভাপতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।