ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ ঢাকা: আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি বলেছেন, সংবাদ ও সম্পাদকীয় প্রকাশের ক্ষেত্রে চরম মাত্রায় সতর্ক হয়েছেন বাংলাদেশে সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকরা। এমন কি প্রতিশোধ নেয়ার আতঙ্কে তারা অনেক কলাম ও সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বিরত থাকেন। প্রথমবারের মতো ঢাকায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ক্যাম্পেইন ইভেন্টে তিনি এ কথা বলেন।
শনিবার ঢাকায় ইএমকে সেন্টারে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টার। ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিড ডে উপলক্ষে এই ইভেন্ট আয়োজন করা হয়।
এতে সাদ হাম্মাদি বলেন, যখন মানুষ জানতে পারেন না যে, তারা যা বলেন বা লেখেন তা অপরাধ (অফেন্স) হিসেবে গণ্য হবে, তখন স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে গিয়ে তারা ভীতশঙ্কিত হয়ে পড়েন। তার মতে, এমন অনুভূতি থেকে অসন্তোষের জন্ম হয়। একটি সামাজিক উন্নয়নশীল দেশের জন্য তা স্বাস্থ্যকর বা উপযোগীও নয়।
অনুষ্ঠানে সাদ হাম্মাদি বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এই ইভেন্ট হলো স্বাধীনতা বা ফ্রিডমের প্রতি অব্যাহত প্রচারণার অংশ। এর অংশ হলো ওই সব দেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, যেখানে শান্তিপূর্ণভাবে মতামত শেয়ার করার কারণে মানুষকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুরক্ষা ছাড়া মানুষ অবাধে নিজেকে প্রকাশ ঘটাতে পারে না। তথ্যের ওপর সেন্সরশিপ ও প্রতিশোধের আশঙ্কা জীবনধারণের গুণগত মান হ্রাস পায়, হ্রাস পায় সততা ও জনগণের কাছে জবাবদিহিতার বিষয়।
ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন কমেডিয়ান, কার্টুনিস্ট, সাংবাদিক, ব্লগার, সঙ্গীতজ্ঞ, কবি, অধিকারকর্মী ও সরাসরি পারফরমেন্স করা শিল্পীরা। তারা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে অগ্রসরমান করার বিষয়কে ফুটিয়ে তোলেন। একই সঙ্গে এসব অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে সরকার ও জনগণ কি ভূমিকা পালন করতে পারে তার প্রতিফলন ঘটানো হয়।
ওই অনুষ্ঠান থেকে হ্যাসট্যাগ #ইওরস পিসফুলি চালু করা হয়। এতে সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় যে, মত প্রকাশের শান্তিপূর্ণ চর্চাকে অপরাধ হিসেবে দেখা উচিত নয়।
অ্যামনেস্টির ক্যামেইন ইভেন্টে স্বাক্ষর করেন প্রথিতযশা ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলম, কমেডিয়ান ইয়ামিন খান ও আহমদ আশিক, কার্টুনিস্ট সৈয়দ রাশাদ ইমাম তন্ময়, সাংবাদিক শুপ্রভা তাসনিম, আইরিন খান, সৈয়দ তাশফিন চৌধুরী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ইরেশ যাকের, ব্লগার ও অধিকারকর্মী ফাহমিদুল হক, আর্টিস্ট লিজা হাসান, ঋতু সাত্তার, সাইফ মাহমুদ ও আবীর খালিদ। পারফরমার ও আলোচকদের মধ্যে আরো ছিলেন আদিবাসী অধিকারকর্মী ও সঙ্গীতজ্ঞ শ্যাম সাগর মানকিন, আরমিন মুসা, তার ব্যান্ড ঘাসফড়িং, অধিকারকর্মী সামিনা লুৎফা নিত্রা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিশ্বজুড়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান সম্পর্কে সমর্থন করেন বিভিন্ন স্তরের বিশ্ববরেণ্য আর্টিস্টরা। এর মধ্যে রয়েছে কোল্ডপ্লে, রাসেল ব্রান্ড, জিমি কার, জন স্টিওয়ার্ট, জন অলিভার, স্টিফেন কোলবার্ট।
Check Also
গাজায় আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজা ভূখণ্ডে আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা …