ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্টঃ ঢাকা: বিয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি জানিয়েছেন সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ঘনিষ্ঠ ছবির মেয়েটি তার বান্ধবী।
বুধবার রাত ১২টায় রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান শোভন।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, কেউ ছাত্রলীগ করলে তার বান্ধবী থাকতে পারবে না এমন কথা তো নেই। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের কোথাও এমন কথা লেখা নেই। পদ চলে গেলে জানতে পারবেন সে কে? শোভন বলেন, আপনারা জানেন ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার পর থেকেই আমার সম্পর্কে এ ধরনের একটি বিতর্ক তৈরি করে দেয়া হয়েছিল। যার সম্পর্কে কথা উঠছে সে আমার বান্ধবী।
এ সময় পাশে বসা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, অপেক্ষা করুন, দাওয়াত পাবেন শিগগিরই। এ সময় সবাই হেসে ওঠেন।
প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার দিন জারিন দিয়া নামে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের আগের কমিটির সদস্য ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে বিবাহিত দাবি করেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে উদ্দেশ করে ফেসবুকে এই নেত্রী লিখেছেন ‘রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং গোলাম রাব্বানী ভাই, আপনারা যেসব মেয়েদের কমিটিতে রেখেছেন, তারা কয়দিন থেকে রাজনীতি করে? নিজে বিবাহিত বলে কমিটিতে দুনিয়ার বিবাহিত মেয়েদের রেখেছেন। গোলাম রাব্বানী ভাই আমাকে সবার সামনে বলছিলেন, দুই দিনের মেয়ে কেমনে পোস্ট পাইছো বুঝি নাই। অনেক তথ্য অপেক্ষা করছে আপনাদের জন্যে। এই বিবাহিত বিতর্কিত কমিটি মানি না, মানবো না। আমার শ্রমের মূল্য দিতে হবে আপনাদের।’ এরপর আরও কয়েকজনের স্ট্যাটাসে শোভনের সঙ্গে একটি মেয়ের অন্তরঙ্গ ছবি পোস্ট করা হয়।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেছেন, যাচাই-বাছাই করে সদ্য ঘোষিত ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিতর্কিতদের বাদ দেয়া হবে। সে ক্ষেত্রে পদবঞ্চিতদের কমিটিতে পদায়ন করা হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি বহাল থাকবে।
শোভন বলেন, প্রাথমিকভাবে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তারা যদি নিজেদের নির্দোষ দাবি করতে না পারে, তা হলে পদগুলো খালি ঘোষণা করা হবে।
তা ছাড়া যাদের নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, শুধু তারা নয়; যারা ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করছে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন ছাত্রলীগ সভাপতি।
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, আমাদের গঠনতন্ত্রের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি সেটি মানার। কিন্তু তার পরও যদি কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থা,কে যেমন বিবাহিত, অছাত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীসহ গঠনতন্ত্রবিরোধী কোনো অভিযোগ থাকে, তা হলে তাকে আমরা অব্যাহতি দেব। তারা কেউ আমাদের কমিটিতে থাকতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিৎ চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনসহ মহানগর ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বুধবার রাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা দলীয় সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত আসে।
প্রসঙ্গত, সোমবার ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ। এর পর থেকেই ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানান। কমিটি ঘোষণার পর অযোগ্য, অছাত্র, বিবাহিত, বহিষ্কৃত, অগ্নিসন্ত্রাসে যুক্ত, বিভিন্ন মামলার আসামিদের ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদায়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের একাংশ। সন্ধ্যায় ওই বিক্ষোভে দুই দফা হামলা ঘটনায় ডাকসুর তিন নেতা ও নারীসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।