ক্রাইমবার্তা রিপোটঃফুলবাড়ী উপজেলার দুস্থ্য মহিলা উন্নয়ন (ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট-ভিজিডি) কর্মসুচির আওতায় ৬টি ইউনিয়নের ৫৭৯৯ উপকারভোগীর প্রত্যেককে প্রতিমাসে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৩০ কেজি করে চাউল দেয়া হতো। এজন্য গত ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের জন্য দুই বছর মেয়াদি কার্ড দেয়া হয়। এ দুই বছর প্রত্যেকে মাসিক ২০০ টাকা করে সঞ্চয় করেছেন মোট ৪৮০০ টাকা। লাভ সহ ওই টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯’শ ১১ টাকা।
কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৫ মাস অতিবাহিত হলেও সঞ্চয়ের টাকা ফেরত পাননি উপকারভোগীরা। ওই টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জয়ন্তী রানী। অফিসের বারান্দায় বার বার ধর্না দিয়ে টাকা না পেয়ে অবশেষে ইউএনও কার্যালয় ঘেরাও করেন নারীরা।
গতকাল রোববার সকাল ১১টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলা নিবার্হী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন ভিজিডি’র কার্ডধারী ৫ শতাধিক কার্ডধারি দরিদ্র নারী। নারীদের তোপের মুখে পড়েন ইউএনও। পরে আগামী তিন দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
জানা গেছে, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় বাংলাদেশ সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট একাডেমী (বিএসডিএ) ও ডেভেলপমেন্ট পার্টনার (ডিপি) নামের দুইটি এনজিও’র বাস্তবায়নে ২০১৭ সালের ১লা জানুয়ারী ফুলবাড়ী উপজেলায় দুই বছর মেয়াদী ভিজিডি প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। ৬টি ইউনিয়নের ৫৭৯৯ হতদরিদ্র নারীকে জনপ্রতি ৩০ কেজি চাল প্রদানের বিপরীতে পাস বইয়ের মাধ্যমে মাসিক ২০০ টাকা সঞ্চয় জমা নেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক ফুলবাড়ী শাখায় ২ কোটি ৬৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩২০ টাকা জমা হয় দুই বছরে। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষে সঞ্চয়ের টাকা হাতে হাতে বিতরণ করলে ছিনতাই হতে পারে- এমন অজুহাতে সোনালী ব্যাংক ফুলবাড়ী শাখা থেকে ওই টাকা ডাচ-বাংলা রকেট ব্যাংক কুড়িগ্রাম শাখায় স্থানান্তর করা হয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জয়ন্তী রানী ও ডাচ-বাংলা রকেটের লোকজন।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ছুটি রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. মাছুমা আরেফিন জানান, ভিজিডি ভুক্তভোগীরা আমার অফিস ঘেরাও করে অভিযোগ দিয়েছে, আমি নির্দেশ দিয়েছি তাদের টাকা যেনো তিনদিনের মধ্যে ফেরত দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জানান, জামানত হিসেবে হতদরিদ্র মানুষের টাকা কম দেয়া হয়েছে অভিযোগ শুনেছি। ফুলবাড়ীর ইউএনও ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি তাদের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য।